করোনা রোগীর চাপ কমেছে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে সেই সাথে দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। হাসপাতালে আইসিইউ বেডও খালি রয়েছে। পাশাপাশি ভর্তি হওয়া রোগীরা নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সেবা পাচ্ছেন। তবে মৃত্যুর হার প্রায় আগের মতোই আছে।
সোমবার (৩ মে) দুপুর ২টায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনার যে দ্বিতীয় ঢেউ আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেটি কমতে শুরু করেছে। আমরা যদি সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত দেখি, শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এতে করে আমাদের আত্মতুষ্টি বা করোনা চলে গেছে, এরকম ভাবার সুযোগ নেই। এখন ঈদকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহূর্তে আবার করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক ও ক্রিটিক্যাল কেয়ারের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. আসাদুজ্জামান জানান, এখানে মোট ১৫৯টি সাধারণ বেড রয়েছে। এছাড়া আইসিইউ বেড রয়েছে ২৬টি। গত এপ্রিলের অর্ধেক সময় জুড়ে দুই বিভাগের কোনো বেড ফাঁকা ছিল না। গত ১৩ এপ্রিল থেকে রোগীর চাপ কমতে শুরু করে।
সূত্র জানায়, গত ১২ এপ্রিল রোগী ভর্তি ছিল ১৭৫ জন। ১৩ তারিখে তা কমে ১৫৮ জনে দাঁড়ায়। আর ১৫ তারিখে রোগী সংখ্যা ছিল ১৪৩ জন। এভাবে কমতে কমতে সোমবার (২ মে) ৬৯ জন করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। তাদের অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার করোর মৃত্যু হয়েছে কিংবা চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও চলে গেছেন। আর মৃত্যুর হার একেকদিন একেক রকম।
ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগেও আইসিইউ বেডের জন্যে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে। কিন্তু এখন ১১টির মতো আইসিইউ বেড খালি রয়েছে। সাধারণ বেডে চিকিৎসা নিয়েই রোগীরা সুস্থ হচ্ছেন। আগে আইসিউতে ভর্তি হওয়ার পরই মারা যাওয়ার যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এখন ওই পরিস্থিতি নেই।করোনা রোগীর মূল চিকিৎসা হলো সঠিক সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে অক্সিজেন সেবা দেওয়া। এখন রোগীরা শতভাগ সেবা পাচ্ছেন। অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি নেই। ফলে রোগীরা সুস্থ হতে পারছেন।
স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখছি যে, বিভিন্ন শপিংমলে, বিভিন্ন দোকানে মানুষের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়েছে। অনেকেই ঈদের বাজার করতে বের হচ্ছেন। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা ছিল, সেটি করা হচ্ছে না।আমরা যে বিধিনিষেধের কথা বলছি, এটা কিন্তু আমাদের সবাইকে মিলেমিশে করতে হবে।
টিকা প্রসঙ্গে অধিদফতরের এই মুখপাত্র বলেন, আমরা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে পরিমাণ টিকা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটি এখনও পাইনি। সেটি যোগাড় করার জন্য বিভিন্নভাবে যোগাযোগ চলছে। ভারতের বাইরে যেসব দেশে অক্সফোর্ডের টিকা উৎপন্ন করা হয়, সেগুলোতেও যোগাযোগ চলছে।