ভোক্তাকণ্ঠ প্রতিনিধি: বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস (কোভিট-১৯)। এই মহামারী থেকে রক্ষা পেতে দেশের প্রতিটি জেলা লকডাউনে রেখেছে সরকার। আর এই সুযোগে বিভিন্ন নিত্য পণ্যের দাম বেশি রাখছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিশেষ তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এরই প্রেক্ষিতে আজ শনিবার বরিশাল, রাজবাড়ী, চাঁদপুর, যশোর, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, নেত্রকোণা, ভোলা, গাজীপুর ও রাজশাহী জেলায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব বাবলু কুমার সাহার সার্বিক নির্দেশনায় এসব বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব খোন্দকার আনোয়ার হোসেন, সহকারী পরিচালক জনাব সুমি রানী মিত্র ও বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শাহ শোয়াইব মিয়ার নেতৃত্বে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠি বাজার, মিয়ার হাট বাজার, ইন্দেরহাট বাজার এবং বরিশাল জেলার গুঠিয়া বাজার ও মাধবপাশা বাজারে তদারকিমূলক অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান চলাকালে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় দুলাল স্টোরকে ৫ হাজার ও জননী স্টোরকে ৪ হাজার টাকা, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করায় মেসার্স সালেহিয়া ফটোস্ট্যাট এন্ড কনফেকশনারীকে ৩ হাজার এবং পণ্যের মোড়কে উৎপাদন, মেয়াদের তারিখ ও খুচরা বিক্রয় মূল্য না থাকায় নিউ ঢাকা স্টোরকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অন্যদিকে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর বাজারে মূল্যতালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করার দায়ে রনজিত স্টরকে ৩৮ ধারায় ১ হাজার টাকা, চাঁদপুরে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা ও দ্রব্যমূল্য বেশি নেয়ায় ৩ প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার টাকা, যশোর জেলার চূড়ামনকাটি বাজার ও বড়বাজারে বড়বাজারে ৭০ টাকা দরে প্রতি কেজি রসুন ক্রয় করে ১০০ টাকা দরে বিক্রি এবং এক আড়তদারের সাথে যোগসাজশে ভুয়া ক্রয় রশিদ বানিয়ে উচ্চমূল্যে রসুন বিক্রি করার অপরাধে সনজিত সাহা ও আড়তদারকে ১০ হাজার টাকা ও চূড়ামনকাটি বাজারে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্কতামূলক ২ হাজার টাকা, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কংসনগর, দেবপুর ও ময়নামতি বাজারে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ও ঔষধ বিক্রির অপরাধে দুইটি ফার্মেসী ও একটি মুদির দোকানকে ২১ হাজার টাকা, নেত্রকোনায় ছোট বাজার ও বড় বাজারে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, তাতে হালনাগাদ তথ্য না থাকা এবং তা যথাযথ স্থানে প্রদর্শন না করায় ২টি প্রতিষ্ঠানকে ৩৮ ধারায় মোট ৬ হাজার টাকা, ভোলায় মহাজনপট্টির বাজার, পরানগঞ্জ বাজার ও কাচিয়া বাজারে অতিরিক্ত দামে চাল, ডাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি ও পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ৩৮ ও ৪০ ধারা মোট ৯ হাজার ৫ শত টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও রাজশাহী মহানগরের তেরখাদিয়া বাজার, উপশহর বাজার, বখতিয়ারাবাদ বাজার ও গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ১০ টি প্রতিষ্ঠানে ৩৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযান শেষে উপস্থিত ভোক্তাদের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানানো হয়। অভিযানসমুহে উপস্থিত থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেন জেলা পুলিশের সদস্যবৃন্দ।