করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে সরকার সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। লকডাউন চলাকালীন কর্মহীন প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৫০০ টাকা এবং লকডাউন বাড়লে কর্মহীন প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার ইতোধ্যে কর্মহীন পরিবারের জন্য ৫৭২ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যা এরই মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি কপোরেশনের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পৌঁছে গেছে।
তবে, কঠোর লকডাউন সাত দিনের বেশি বাড়লে প্রতিটি কর্মহীন পরিবারকে দেওয়া হবে খাবারের প্যাকেট। এর মধ্যে থাকবে ১০ কেজি চাল, এক কেজি তেল, এক কেজি ডাল, চার কেজি আলু, এক কেজি লবণ। সহায়তার এই সব পণ্যপ্যাকেট জনপ্রতিনিধিরা পৌঁছে দেবেন নিজ নিজ এলাকার তালিকাভুক্ত কর্মহীন পরিবারে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ পরিবারকে ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) কর্মসূচির আওতায় এ আর্থিক সহায়তা দেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, পরিবারপ্রতি ৪৫ টাকা কেজি দরে ১০ কেজি চালের সমমূল্য, অর্থাৎ কার্ডপ্রতি ৪৫০ টাকা হলেও ৫০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হবে ৫০০ টাকা হারে। যা পাবে কর্মহীন প্রতিটি পরিবার। এটি করোনাকালীন প্রথম উদ্যোগ।
জানা গেছে, দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯২টি উপজেলার জন্য ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৩টি কার্ড এবং ৩২৮টি পৌরসভার জন্য ১২ লাখ ৩০ হাজার ৭৪৬টি কার্ডসহ মোট এক কোটি ৯ হাজার ৯৪৯টি ভিজিএফ কার্ডের
বিপরীতে ৪৫০ কোটি ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া কোভিড পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্য সহায়তার জন্য ১২১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৬৪টি জেলার ৪ হাজার ৫৬৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হারে মোট ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর, গাজীপুর এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য ৭ লাখ টাকা হারে বরাদ্দ দেয়া হয়। ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের জন্য ৫ লাখ টাকা হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে সারা দেশের ৩২৮টি পৌরসভার অনুকূলে মোট ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রতিটি পৌরসভার জন্য ২ লাখ টাকা, ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রতিটি পৌরসভার জন্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রতিটি পৌরসভার জন্য এক লাখ টাকা হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, কঠিন লকডাউনের কথা বিবেচনা করেই সরকার এরই মধ্যে ৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে, যা ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছে। মাত্র একসপ্তাহের লকডাউন। তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। হবেও না। এই বরাদ্দ থেকে প্রতিটি কর্মহীন পরিবার হাতে নগদ ৫০০ টাকা পেয়ে যাবেন। তবে করোনা সংক্রামণ রোধ পরিস্থিতি উন্নত না হলে লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে সরকারের তরফ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে আগের মতোই।