পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার কাজিরহাট ফেরিঘাটে পন্টুন ভেঙে দুই দিন যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকায় এই নৌপথের দুদিকে আটকে আছে ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন। ৫ কিলোমিটারজুড়ে দীর্ঘ যানবাহনের সারি তৈরি হয়েছে।
এছাড়া ভেঙে যাওয়া পন্টুনের কারণে ঘাটে ভিড়তে না পেরে আরিচা থেকে যানবাহন নিয়ে আসা দুটি ফেরি দীর্ঘ সময় ধরে নদীতে নোঙর করেছিল। এর ফলে এই ফেরিঘাটে পারাপারের জন্য আসা যানবাহনের শ্রমিক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পড়ে। শনিবার গভীর রাতে আরিচা ঘাট থেকে নতুন পন্টুন নিয়ে আসা হয় এবং সেটি স্থাপন করলে কিছুটা দুর্ভোগ কমে আসছে।
কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাত নয়টার দিকে ঘাটের একমাত্র পন্টুনটি হঠাৎ করেই ভেঙে যায়। এতে ফেরিঘাটে কোনো ফেরি ভিড়তে না পারায় বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। ফেরিঘাটের ভেঙে যাওয়া পন্টুনের কাছে নোঙর করেছিল আরিচা থেকে যানবাহন নিয়ে আসা দুটি ফেরি। গভীর রাতে পন্টুন স্থাপন করে রোববার সকাল থেকে ঘাট সচল করা হয়েছে।
সরেজমিনে গেলে যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা অভিযোগ করে জানান, কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে ছয় থেকে সাতটি ফেরির প্রয়োজন। কিন্তু চালু রয়েছে চারটি। যে চারটি চালু রয়েছে সেগুলো একদিকে যেমন ছোট ও ধীরগতির, তেমনি ত্রুটিযুক্ত। ফলে কাজিরহাট ফেরিঘাটে আরিচায় পার হতে আসা যানবাহনের ভিড় লেগেই থাকে।
কয়েকজন ট্রাকচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহাসড়কে চার-পাঁচ দিন ধরে এভাবে বসে থাকায় খাওয়ার কষ্টের সঙ্গে টয়লেটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। অথচ ঘাটের সুপরিসর ট্রাক টার্মিনালে থাকলে মহাসড়ক যেমন যানজটমুক্ত থাকতো তেমনি ট্রাক শ্রমিকদেরও থাকা, খাওয়া ও টয়লেট নিয়ে সমস্যা হতো না।
নওগাঁ থেকে আগত ট্রাকচালক মহিদুল ইসলাম জানান, এত বড় একটি ফেরিঘাটে মাত্র একটি পন্টুন থাকায় মাঝেমধ্যেই ভেঙে যাওয়ার খবর শুনতে পাই। এতে আমাদের চরম ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হয়। এখানে কমপক্ষে ৩টি পন্টুন দরকার।
সড়ক বিভাগের পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জোহা বলেন, কাজিরহাটের ট্রাক টার্মিনাল দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। টার্মিনালটি দখলমুক্ত হলে ঘাট-সংলগ্ন মহাসড়ক অনেকটাই যানজট মুক্ত হবে।
বিআইডব্লিউটিসির কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, আরিচা থেকে নতুন পন্টুন এসে ভেঙে যাওয়া পন্টুনটি সরিয়ে ওই স্থানে নতুন পন্টুন বসানো হয়েছে। যানজট কিছুটা কমে আসছে।