কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (৪র্থ পর্ব)

বিভিন্ন গ্রাম ও ইউনিয়ন কমিটি করার জন্য কৃষক ভাইদের কে দু কেজি চাল দিয়েও উদ্বোধন করেছেন যা আমরা বিভিন্ন ভাবে দেখতে পাই। ইহা প্রতারণার শামিল ও দুঃখজনক। যেখানেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক কে আমরা সহযোগিতা করার কথা সেখানে ভোটের বাকি রয়েছে আরও দেড় বছর। সুতরাং আগামী বৈশাখ মাস ধান না উঠা পর্যন্ত কৃষকের ঘরে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া ছাড়া আমাদের কেউ এই ধরনের অনাকাঙ্খিত কাজ করা সঠিক নয়।

আমাদের দেশে দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য হরতাল, মিছিল, অবরোধ অনেক ধরনের দাবি নিয়ে রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত ইত্যাদি অচল করে দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত শোনা যায় নাই যে, খাদ্য উৎপাদনকারী কৃষিজীবী গণ তাদের সমান অধিকার নিয়ে দাবি দাওয়ার জন্য কোনো হরতাল অবরোধ করেছেন।

যদি এমন কখনো হয় যে যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, বাসস্থান, চিকিৎসা, খাদ্যসহ মানবাধিকারের প্রধান প্রধান বিষয়গুলো দেশে সকলের সমর্থন করা প্রয়োজন মনে করে নড়েচড়ে বসে তাহলে খাদ্যের জন্য হাহাকার পড়ে যাবে। তবে শহরবাসী শিক্ষিত ব্যবসায়ীগণ ও চাকুরীকারীগণ বুঝতে পারবেন কৃষি উৎপাদন না হলে আমরা কিভাবে বাঁচতে পারি অথবা কৃষি পণ্য বা খাদ্য উৎপাদন না থাকলে তখন বাজারে আসবে না। এমন অবস্থায় আমরা টাকা হাতে নিয়ে খাদ্য পাবো না।

তাহলে কেমন হতে পারে?

কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (৪র্থ পর্ব)

তখন মানুষ বাঁচানো কঠিন হবে। ডিম, দুধ, ফল-ফসল, গবাদিপশু, মাছ সবজিসহ খাদ্যতালিকার সবকিছুই কৃষি খাতের পণ্য। সুতরাং কৃষিখাতকে বাঁচাতে হলে সরকারিভাবে অন্য দেশের মতো উৎপাদনে ভর্তুকি, বিনা সুদে ঋণ, এবং মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো দেশের সকল মানুষের বিশেষ করে শহর উন্নত এলাকার মতো কৃষিজীবীদের সার্বিক উন্নয়ন হবে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন। তখন ইনকামও বাড়বে এবং দেশ ও স্বনির্ভর হবে। তাছাড়া আধুনিক চাষাবাদের জন্য টেকনিক্যাল সাপোর্ট সহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সরকারি ভাবে প্রত্যেকটি কৃষকে দিতে হবে।

ভালো খামারি ও চাষী ভাইদের কে প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন এবং প্রতিটি গ্রামে তিনজন করে ভালো কৃষক নির্বাচন করে সম্মানিত করতে হবে এবং পুরস্কৃত করতে হবে।

আমি হতাশ হওয়ার মতো কিছু দেখছিনা। তবে বর্তমানে সরকারি উদ্যোগে আরো চাঙ্গা করে কৃষিবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকারি উদ্যোগ এবং স্থানীয় সর্বস্তরের অংশগ্রহণে আনতে পারে আমাদের কৃষি নির্ভরশীল দেশের ক্ষুধা-দারিদ্র্য সহ সকল বাধা অতিক্রম করে পৃথিবীর মানচিত্রে উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত করতে।

আসুন আমরা সকলেই এদেশের এক পরিবারের সন্তান হিসেবে বসবাস করি। ইসলাম ধর্মে একটি কথা রয়েছে, যে প্রতিবেশী অর্ধাহারে, অনাহারে অথবা রোগাক্রান্ত থাকে আর ‌যদি আর কোন উপায় না পেয়ে থাকে তাহলে নামাজ রোজাসহ অনেক জায়গায় গলদ হবে।

[চারটি পর্বের আজ শেষ পর্ব]

৩য় পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (৩য় পর্ব)

২য় পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (২য় পর্ব)

১ম পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আমরা হব স্বনির্ভর (১ম পর্ব)

বিশেষ রচনা দেখতে চোখ রাখুন: বিশেষ রচনা Archives – Voktakantho

লেখকঃ

জামিল চৌধুরী

সভাপতি,

ক্যাব, সিলেট জেলা শাখা