গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া উপজেলায় প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি পেলেন ৪৩ ভিক্ষুক। শনিবার গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ৪৩ জন ভিক্ষুকের হাতে তাঁদের নিয়োগপত্র তুলে দেন। এর আগে ‘অবলম্বন’ নামে এই ফ্যাক্টরির উদ্বোধন করেন। জানা গিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাস থেকে কোটালিপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও সরকারি উদ্যোগে এই প্যাকেজিং ফ্যাক্টরির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে এই ফ্যাক্টরিরর নির্মাণকাজ শেষ হয়।
মারণ করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দাপট, ফের লকডাউন (Lockdown) – সারা বিশ্বের পরিস্থিতিই উলটেপালটে দিয়েছে। মহামারীর থাবায় শুধু প্রাণই নয়, কাজও হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। পরপর দু’বছর একই পরিস্থিতি। নতুন চাকরির আশাও তেমন নেই। এই হতাশাজনক পরিস্থিতিতে অবশ্য ব্যতিক্রমী ছবি বাংলাদেশ। কুশলা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল বলেন,
”কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলি গ্রামের ৪৩ জন নারী ও পুরুষ ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন সময়ে এই পেশা থেকে উত্তরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু কখনওই তাঁদের এই পেশা থেকে নিবৃত্ত করা যায়নি। তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারি উদ্যেগে চৌরখুলি গ্রামে এই প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়। এলাকাবাসী স্বাগত জানিয়েছেন এই উদ্যোগকে। ভিক্ষুকের হাত এখন থেকে হয়ে উঠবে কর্মজীবীর হাত।”
-কামরুল ইসলাম বাদল
চৌরখুলি গ্রামের ভিক্ষুক সোনামতি বেগম, রেখা বেগম, ডালিম বেগমদের বক্তব্য,
”আমরা আর ভিক্ষা করতে চাই না। আমরা কাজ করে খেতে চাই।ভিক্ষায় কোনও সম্মান নেই। এতদিন কোনও কাজ পাইনি। তাই ভিক্ষা করছি। এখন উপজেলা প্রশাসন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করে আমাদের চাকরি দিয়েছে। আমরা এখন এখানে চাকরি করে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারব।”
মানুষের সুস্থ্য, সুন্দর ও শান্তিময় জীবন-যাপনের নিশ্চয়তা দেয়াই মানবাধিকার এবং ভোক্তা অধিকার অবশ্যই মানবাধিকার। কারণ ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকা ও বেঁচে থাকার সম্পর্ক নিবিড়।যেহেতু রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকই ভোক্তা এবং এই উদ্যোগ এর ফলে কর্মময় হবে এই ৪৩ ভিক্ষুকের জীবন, যার ফলে তাদের এই নতুন অধিকারের বিষয়টি ফলপ্রসু হবে । আর এভাবেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব।