ঢাকা,৮ মে বুধবারঃ গতকাল রাজধানীর বাদামতলি ফলপট্টিতে র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে এক ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। বেলা ১২ টায় শুরু হওয়া এ অভিযানের শুরুতে, বাদামতলীর শাহজাদা মিয়া লেনের, জনৈক রুবেল হোসেনের মালিকানাধীন ‘মা এন্টারপ্রাইজ’ নামের গুদামটির মালিক ও কর্মচারীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তালা লাগিয়ে আত্মগোপন করে। বাধ্য হয়েই তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে হয় র্যাব সদস্যদের।
গুদামের ভেতরে তাঁরা প্রচুর নতুন ও স্থানীয়ভাবে তৈরি নকল মিথ্যে তথ্য সম্বলিত খালি কার্টন দেখতে পান। স্পষ্টতই, পুরনো কার্টনের খেজুর মেয়াদ উত্তীর্ণ ,তাই সেই পচা ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর নতুন কার্টনে ঢুকিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছিল। স্থানীয়ভাবে ছাপানো লেবেল লাগানো কিছু কার্টনে ইরাকের ‘ডেট ক্রাউন’ লেখা ছিল, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেয়া আছে ২০২০ সাল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কার্টনগুলো খুলে দেখা যায় ভেতরের পচা গলা খেজুরে পোকা কিলবিল করছে। অনেক খেজুরের কার্টনে প্যাকেটজাত করার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে তারিখ ১০ মে, ২০১৯, যা আজ থেকে ২ দিনের অগ্রিম! কার্টনের গায়ে ভুয়া ‘কিউআর’ কোড পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম, মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর বিক্রির দায়ে মা এন্টারপ্রাইজের মালিক রুবেল হোসেনের দোকান ও গুদামের সব খেজুর জব্দ এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
সিলেটে দশক পুরনো পচা খেজুরঃ মঙ্গলবার ( ০৭ মে) নগরীর দক্ষিণ সুরমা ফলের আড়তে দুইটি দোকান থেকে প্রায় ১০ বছরের পুরনো ৪০৫ বস্তা পচা খেজুর জব্দ করে ধ্বংস করে র্যাব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে খেজুরের বস্তাগুলো নিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়। নষ্ট করা খেজুর ওজনে সাড়ে ১২টন বা ১২ হাজার ৫৫৫ কেজি হবে। এসময় মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর থাকায় আনিশা ফ্রুটকে ৫০ হাজার, পচা মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর বিক্রির দায়ে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ৫০ হাজার ও বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভেজাল খাদ্য বিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-৯ এর সহকারী পরিচালক (এএসপি) সত্যজিত কুমার, অভিযান চলাকালে সাথে ছিলেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে জানান, ‘সময়মতো অভিযান না হলে হয়তো এই খেজুর বাজারে ছড়িয়ে যেতো। এটি হয়তো ৮/১০ বছর আগের খেজুর হতে পারে। খেজুরগুলোতে ছত্রাক পড়েছে, উপরের খোসা কালচে হয়ে পড়ে যাচ্ছে। ভেতরে পোকা ধরেছে। এসব পচা খেজুর মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা বোঝানো কঠিন। ক্যান্সার কোষ কিন্তু সবার শরীরেই আছে। এগুলো অনুকূল পরিবেশ পেলে জেগে উঠবে। অথচ মানুষ পুষ্টি গুণের ইফতারের অনুসঙ্গ হিসেবে খেজুর কিনে নেয়। ব্যবসায়ীদের নুন্যতম সততার পরিচয় দেয়া উচিত’।