ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক
খোলা বাজার থেকে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার কিনতে পারবেন গ্রাহকরা। মিটার স্থাপনের আবেদনের সঙ্গে কেনা মিটারটিও সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিতে জমা দিতে হবে। কোম্পানি যাচাই বাছাই করে মিটারের মান নির্ণয়ের পর স্থাপন করতে পারবেন গ্রাহকরা।
সম্প্রতি খোলা বাজার হতে প্রি-পেইড /স্মার্ট গ্যাস মিটার ক্রয় ও স্থাপন নীতিমালা-২০১৯ (সংশোধিত ২০২১) এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অনেকেই বলছেন, মিটার কেনার বিষয়টি কেন আমরা উন্মুক্ত করে দিচ্ছি না। তাই উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো। এখন এই নীতিমালা অনুসরণ করে যে কেউ প্রি-পেইড মিটার কিনে নিজের বাসায় স্থাপন করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরাও চেষ্টা করছি সরকারিভাবে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজটি দ্রুততার সঙ্গে করতে। আগামী দুই বছরের মধ্যে আমরা প্রায় ৩৫ লাখ গ্রাহকের ঘরে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করতে চাই। সে কাজ এখন চলমান আছে।’
জ্বালানি সচিব জানান, গ্রাহক যদি মিটার কিনে দেন, তাহলে বিলের সঙ্গে এখন যে মিটার ভাড়া বাবদ ১০০ টাকা কাটা হয় সেটি আর তাকে দিতে হবে না। আর সরকারিভাবে যদি মিটার স্থাপন করা হয় সে ক্ষেত্রে প্রি-পেইড মিটারের ক্ষেত্রেও তাকে মিটার ভাড়া দিতে হবে।
নীতিমালায় মোট ১৭টি ধারা রয়েছে। এর মধ্যে ধারা ৭-এ বলা হয়, খোলা বাজার থেকে নির্ধারিত স্পেসিফিকেশনের উন্নতমানের মিটার কেনার বিষয়টি নিজ দায়িত্বে নিশ্চিত করবে গ্রাহক। মিটার স্থাপনের আবেদনের সঙ্গে কেনা মিটার গ্যাস বিতরণ কোম্পানি কাছে জমা দিতে হবে। আবেদন পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট গ্যাস বিতরণ কোম্পানি সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে নিজস্ব টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে গ্রাহকের মাধ্যমে খোলা বাজার থেকে কেনা মিটারের যথাযথ কার্যকারিতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গুণগত মান যাচাই ও ইন্টারফেসিং নিশ্চিত করবে।
এ ক্ষেত্রে মিটার স্থাপনে রাইজার মোডিফিকেশন, কমন হেডার তৈরি এবং মিটারকে গ্রাহকের অভ্যন্তরীণ লাইনের সঙ্গে স্থাপনসহ কমিশনিং গ্যাস বিপণন নিয়মাবলী অনুযায়ী কোম্পানির মাধ্যমে বিতরণ সম্পন্ন করা হবে। এ সংক্রান্ত সব ব্যয় গ্রাহক বহণ করবে। এছাড়া গ্রাহকের অভ্যন্তরীণ লাইনের মোডিফিকেশন করার প্রয়োজন হলে তা গ্যাস বিপণন নিয়মাবলী অনুযায়ী কোম্পানির তালিকাভুক্ত ঠিকাদারের মাধ্যমে গ্রাহক নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করবেন।
ধারা ৮-এ বলা হয়, গ্রাহকের খোলা বাজার থেকে কেনা মিটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে চার্জিং ও রিচার্জিং অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং বিক্রয়োত্তর সেবার বিষয়টিও নীতিমালায় আছে। তাতে বলা হয়, কোম্পানির নিজস্ব জনবল দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পয়েন্ট অব সেলস স্থাপন করতে পারে।
কোম্পানি তৃতীয় পক্ষ নিয়োগ বা আউটসোর্সিং করতে পারে, কোম্পানির হটলাইন বা গ্রাহকসেবার মাধ্যমেও চার্জিং করা যেতে পারে। ব্যাংক, কমন বুথ বা ভেন্ডিং সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা যেতে পারে। এমনকি মোবাইল ফোনে অ্যাপসও তৈরি করতে পারে।
নীতিমালায় গ্রাহকের জন্য ধারা ১৫-তে বলা হয়, খোলা বাজার থেকে কেবল সরকার নির্ধারিত স্পেসিফিকেশনের উন্নতমানের প্রি পেইড বা স্মার্ট মিটার কেনা নিশ্চিত করতে হবে। মিটার কেনার সময় বিক্রয়কারীর কাছ থেকে মিটারে কাগজপত্র, ওয়ারেন্টি, ইউজার ম্যানুয়াল সংগ্রহ করতে হবে।
কেনা মিটার ও কাগজপত্রগুলো বিতরণ কোম্পানিতে জমা দিতে হবে। মিটার স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা এবং মিটার স্থাপনে কোম্পানিকে সহায়তা করতে হবে। নিজ চাহিদা অনুযায়ী গ্রাহক মিটার চার্জ বা রিচার্জ করতে পারবেন।
খবর: বাংলাট্রিবিউন