এসক্রো সার্ভিসে জমা কাস্টমারের ২১৪ কোটি টাকা গোয়েন্দা সংস্থার অনুমেদান পেলেই ফেরত দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কমিটির সমন্বয়ক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, এসক্রো সার্ভিসে যে ২১৪ কোটি টাকা আটকা আছে, তা সিআইডির ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই বিতরণ শুরু হবে। এটা সিআইডি ফ্রিজ করে রেখেছে। তাদের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই টাকা বিতরণ শুরু যাবে। এখানে হয়তো সার্ভিস চার্জ বাবদ এক শতাংশ টাকা কাটা হতে পারে। টাকা যেহেতু অনলাইনে দেওয়া হয়েছে, ফলে এটা অনলাইনেই ফেরত যাবে।
অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, গত ৩০ জুনের পর যে ২১৪ কোটি টাকা আটকে আছে, সেটা আমরা দ্রুত ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। অলরেডি আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েছি। সেটা ফ্রিজ করা আছে, ডিফ্রিজ হলেই আমরা ভোক্তাদের দ্রুত ফেরত সে টাকা ফেরত দেবো। এরও আগের যে ২৬০ কোটি টাকা জমা আছে, সেটার বিষয়ে আমরা অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বললাম। আমাদের যে ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট আছে, তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর আগের টাকাটা কীভাবে ফেরত দেওয়া যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তদারকি ও পরিবীক্ষণের আওতায় আনা এবং সাম্প্রতিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনৈতিক ব্যবসার ফলে যেসব ভোক্তা প্রতারিত হয়েছেন তাদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, আমরা এটুআইকে (একসেস টু ইনফরমেশন) কিছু দায়িত্ব দিয়েছি। ইউনিক বিজনেস আইডির ফরমেট দিয়েছে তারা। আমাদের কমিটি সেটা ফাইনাল করছে। যা এখানে উপস্থাপন হয়েছে। আমরা সেটা অনুমোদন দিয়েছি। এনালগ ফরম থেকে এটুআই ডিজিটাল ফরম তৈরি করে দেবে। আমরা খুব দ্রুতই এ ইউনিক বিজনেস আইডি চালু করবো। যারা ই-কমার্সে বিজনেস করবে তাদের মেন্ডেটরি এটা করতে হবে। নিবন্ধনের রেজিস্ট্রেশনটা আমরা খুব দ্রুতই খুলে দেবো। যাতে এ ব্যবসাটা মুখ থুবড়ে না পড়ে বা কঠিন না হয়ে যায়। এজন্য সহজ একটা ইউনিক বিজনেস আইডির ফরমেট করেছি। আমরা এটুআই থেকে আরো একটা সাপোর্ট নিচ্ছি, সেটা হচ্ছে এসক্রো সার্ভিসকে অটোমেশন করা বা হামোনাইজরা, সেজন্য আমাদের একটা অ্যাপ ডেভেলপ হচ্ছে।
সভার সিদ্ধান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, মিটিংয়ে আমরা ইউনিক বিজনেস আইডি এবং টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে এসক্রো সার্ভিসের অটোমেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আগামী ১১ নভেম্বর কেবিনেটে একটি রিপোর্ট পাঠাবো।
অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ এবং নিবন্ধনের সময় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নামগুলো আমরা প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। কারণ সত্যিকার অর্থে অভিযুক্ত না হলে তাদের বিজনেসের ওপর প্রভাব পড়বে। তবে এরইমধ্যে যেসব নাম প্রচার হয়েছে, যেমন- ইভ্যালিসহ অন্যান্য সেগুলো মোটামুটি আছে। আর নিবন্ধন প্রক্রিয়া দুই মাসের মধ্যে করতে বলা হয়েছে। আমরা আগামী ১৫ দিন বা একমাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করতে পারবো। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে অনুশাসন দিয়েছেন দুই মাসের মধ্যে সে বিষয়ে বড় ধরনের সাড়া পাবো।
অভিযুক্ত ১৯টি কোম্পানির টাকার পরিমাণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেটার জন্যই আমাদের ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের কাছে তথ্য চাচ্ছি। ১৯টি না কি আরও আছে সেটি দেখতে হবে। ১৭টির মধ্যে কমন আছে আটটি। সেক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৯ এর বেশি হবে। তাদের তালিকা জাস্ট সিলগালা করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে দেবো৷
গত ৩০ জুলাই ই-কমার্স নীতিমালা প্রকাশের আগে যেসব লেনদেনে অনিয়ম হয়েছে, তা মন্ত্রণালয়ের হাতে আসা তালিকার কোম্পানিগুলোর বিষয়ে বিশ্লেষণের পর বলা যাবে বলেও জানান সফিকুজ্জামান।