ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
বাড়বেই গ্যাসের দাম। তবে ঘোষণার জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
জ্বালানি বিভাগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর দ্রব্যমূল্যের বর্তমান উর্ধ্বগতির মধ্যে আবারও গ্যাসের দাম বাড়ালে এটি সাধারণ মানুষের উপর যেন চাপ সৃষ্টি না করে সে বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। এজন্য কতটা সহনশীল রেখে দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া যায় তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত বলা হয়েছে— আবাসিকে আপাতত দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ, আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে দাম যা ছিল তাই থাকবে। তবে এই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুনভাবে বিষয়টি চিন্তা করা হবে।
বিইআরসি সূত্র বলছে, সরকার কি পরিমাণ ভর্তুকি দিতে পারবে। তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এটি চূড়ান্ত হয়ে আসলেই ঘোষণা দেওয়া সম্ভব হবে। চলতি অর্থবছরে গ্যাসখাতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এই ভর্তুকির অঙ্ক বাড়লে ভোক্তার উপরও চাপ বাড়বে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, গ্যাসের দাম বাড়লে বিদ্যুতের দামও বাড়ার কথা। এছাড়া বাণিজ্যিক এবং পরিবহন ব্যয় বাড়বে। আবার শিল্পে দর বাড়লে পণ্যের দামের উপর এর প্রভাব পড়বে। সার্বিক দিক বিবেচনা করলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। ফলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আগে বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে জনমনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গ্যাসের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে।
বিইআরসির একজন কর্মকর্তা জানান, আমরা সব কিছু গুছিয়ে রেখেছি। অর্থ বিভাগ এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হবে। তবে কত ভাগ দাম বাড়বে তা এখনই বলার সময় আসেনি বলে জানান তিনি।
গত ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১২ টাকা ৪৭ পয়সা নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি (মূল্যায়ন) কমিটি। এখন প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা ৩৬ পয়সায়। অর্থাৎ প্রতি ঘনমিটারে ৩ টাকা ১১ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে গ্যাসের দাম প্রায় ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করে কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। তবে এতটা বেশি একবারে দাম বৃদ্ধির খুব একটা নজির নেই। যদিও পেট্রোবাংলার দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবকে অনেকটা খাপছাড়া বলছেন অনেকে। কোনও কোনও খাতে তারা শতভাগের বেশি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। যার যৌক্তিকতা নিয়ে খোদ কমিশনই প্রশ্ন তুলেছে।
আইন অনুযায়ী শুনানির ৯০ দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার কথা। সেই হিসেবে জুনের শেষ ভাগে এই সময় শেষ হচ্ছে। তবে আইনে শুনানির জন্য ৯০ দিনের কথা উল্লেখ থাকলেও সেটি ৯০ কার্য দিবস কিনা তা স্পষ্ট করা নেই। অতীতে এ বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও তার সুরাহা করা হয়নি।
খবর: বাংলাট্রিবিউন