ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম প্রতিষ্ঠানটির হেড অব সেলস (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) ও সবার পরিচিত মুখ হুমায়ুন কবির নিরব ওরফে আরজে (রেডিও জকি) নিরবের পরামর্শ অনুযায়ীই গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। এমনটাই জানিয়েছেন কিউকমের সিইও মো. রিপন মিয়া । তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা সূত্রে এ তথ্য জানগেছে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা সূত্র জানায়, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরজে নিরবের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে। তিনি কিউকমের প্রতারণার মূলহোতা। তার পরামর্শে কিউকমের প্রতারণা করে গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা আটকে রেখেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আরজে নিরব পরিচিত মুখ হওয়া ফেসবুকে তার বিশাল ফ্যান-ফলোয়ার রয়েছে। মূলত ফ্যান-ফলোয়ারদের টার্গেট করে কিউকমের প্রচারণা করে আসছিলেন তিনি। তার মূল কাজই ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষকে কিউকমের প্রতি আকৃষ্ট করা। তার এই প্রচারণায় মানুষ সাড়াও দিয়েছিল। তার কথায় বিশ্বাস করে লাখ লাখ টাকার পণ্য অর্ডার দিয়েছিল গ্রাহকরা। কিন্তু সেই গ্রাহকরা নিরবের কথা বিশ্বাস করে এখন ঠকেছেন।
নিজের ফেসবুক ব্যবহার করে নিরব যে কিউকমের প্রচারণা চালিয়েছেন সে প্রমাণও রয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ আগস্ট ও ২২ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়ে কিউকমের প্রচারণা চালিয়েছেন তিনি।
গত ২৪ আগস্টের পোস্টে নিরব বলেন ‘পুরো দেশ আর সারা দুনিয়া জুড়ে কিউকম ছড়াতে চাই, ইনশাআল্লাহ’। এছাড়াও পোস্টে দেশের ৮ বিভাগে নিজস্ব ডেলিভারি পয়েন্ট, ওয়ারহাউজ, কাস্টমার কেয়ার চালু করবে কিউকম’ বলেও জানান তিনি।
২২ সেপ্টেম্বর গ্রাহকদের সঙ্গে কিউকমের প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসলে নিরব তার পোস্টে লিখেন ‘মনে হয় এই শিল্পটা বন্ধ না করে কেউ থামবে না’। এছাড়া মালিকের পাশে থেকে গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে পোস্টে কারো নাম উল্লেখ না করে তিনি লেখেন, অনেকে তার পিছনে লেগেছ। তিনি চাকরি না ছাড়া পর্যন্ত সেটা চলতে থাকবে বলেও জানান।
নিরবের গ্রেফতারের বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের এডিসি হাফিজ আল ফারুক বলেন, আরজে নিরব কিউকমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তার বিরুদ্ধে গতকাল রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় এক ভুক্তভোগী মামলা করেছেন। সেই মামলায় তাকে আজ ভোরে রাজধানীর আদাবর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্রাহকদের পণ্য ডেলিভারির ২৫০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে কিউকম। যদিও এস্ক্রো সিস্টেমের (Escrow System) মাধ্যমে গেটওয়ে পেমেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ করা তৃতীয় পক্ষ প্রতিষ্ঠান ফস্টারের কাছে কিউকমের গ্রাহকদের ৩৯৭ কোটি টাকা আটকে আছে।