স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এবার চামড়ার সিন্ডিকেট প্রতিরোধে জোর দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকে বিষয়টি নজরদারিতে রাখবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ঢাকায় কোথায় গরুর হাট বসবে সেটা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কতগুলো হাটের অনুমোদন তারা দিয়েছেন, সেটা এই মুহূর্তে আমি বলতে পারবো না। তবে অনেক হাট এবার তারা বন্ধ করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে অনলাইন গরুর হাটকে আমরা উৎসাহিত করছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তা খারাপের জন্য যানজট রয়েছে। আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা সড়ক বিভাগকে অনুরোধ করেছি, তারা যতটুকু সম্ভব রাস্তা সংস্কারের কাজ যেন করে। বিশেষ করে গাজীপুরের রাস্তাটি এবং টাঙ্গাইলের একটি অংশে দ্রুত সংস্কার করার জন্য বলেছি।’
ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু পরিবহনের সময় চাঁদাবাজি বন্ধে বিশেষ নজরদারি থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘পশুবাহী যানবাহনগুলোকে জোরপূর্বক যেখানে সেখানে থামানো যাবে না। দেশের শিল্প এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। শিল্প এলাকায় যেকোনও নাশকতা প্রতিরোধে গোয়েন্দারা তৎপর থাকবেন।’
আরিচা-দৌলতদিয়া-মাওয়া ও বাংলাবাজারসহ সব ফেরিঘাটে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আগাম প্রস্তুতি থাকবে। নৌযানগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পশুর চামড়া কেনাবেচায় জড়িত সিন্ডিকেট প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঈদের আগেই চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেবেন। পাচার রোধে এবং চামড়া যেন সীমান্ত অভিমুখে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকে করবে।’
তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ করে মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও ভেজাল মেশানো রোধে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট থাকবে। ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়ক এবং শিল্পাঞ্চল এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনও জরুরি উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স এবং কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত থাকবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়ার জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমাদের সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের নেতাদের কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতবারের মতো এবারও তারা শ্রমিকদের বেতন সময় মতো পরিশোধ করবেন। গতবার শ্রমিকদের ছুটি নিয়ে একটু জটিলতা হয়েছিল। সেটা যাতে এবার না হয়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তারা সবার সঙ্গে আলোচনা করে আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করোনা মোকাবিলায় যেসব নির্দেশনা দেবে, তা যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সবাই প্রস্তুত থাকবেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
কোরবানির হাটে জনসমাগম সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের দায়িত্ব হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। আইনটা তাদের। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করেছেন। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অনুরোধ অনুযায়ী কাজ করছে। তাছাড়া সারাদেশ থেকে যেসব বেপারিরা ঢাকায় আসবেন, তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসেন, সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি থাকবে।’
সুত্র : [অধিকার]