ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
৩৪ কোটি ১৮ লাখ ডলারের চাল আমদানি করা হয়েছে। যা চালের ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড । তবুও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চাল আমদানিতে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, জুলাই থেকে নভেম্বর—এ পাঁচ মাসে চাল আমদানির এলসি খোলার হার বেড়েছে ১৩ হাজার ৭৭৯ শতাংশ। এলসি নিষ্পত্তির হার বেড়েছে ১৮ হাজার ৮১৮ শতাংশ।
২০২০ সালের জুলাই থেকে নভেম্বরে চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছিল ২৩ লাখ ডলারের। ২০২১ সালের একই সময়ে এলসি খোলা হয় ৩২ কোটি ৫ লাখ ডলারের। একইভাবে আগের বছরের পাঁচ মাসে চাল আমদানির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল ১৮ লাখ ডলারের। ২০২১ সালের একই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ডলারের।
চালের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে গত বছরের শেষের দিকে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপরই হু হু করে বেড়ে যায় এলসি খোলার হার।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, ‘চাল আমদানি বাড়লেও অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কারণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখনও স্বস্তিদায়ক। তবে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে।’
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘রেমিট্যান্স কমে গেছে। রফতানিতেও সমস্যা আছে। অথচ আমদানি বেশি হচ্ছে। এতে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে অসামঞ্জস্য তৈরি হচ্ছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আমদানির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে চাল, গমসহ পণ্য আমদানির বিপরীতে যেখানে এলসি খোলা হয়েছিল ২৩ বিলিয়ন ডলারের, সেখানে এই বছরের একই সময়ে এলসি খোলা হয়েছে ৩৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৫৪২ কোটি ৯২ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৩ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেকর্ড পরিমাণ এলসি খোলার প্রবণতা দেশের অর্থনীতিতে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল পুনরুদ্ধার হিসেবে বিবেচিত হলেও করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ তাতে ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।