সোমবার (২৯ মার্চ) দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পুনরায় বাড়তে থাকায় সব ধরনের জনসমাগম সীমিত, গণপরিবহনে যাত্রী অর্ধেক ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করাসহ বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে দুই সপ্তাহের জন্য ১৮টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গণপরিবহনে বর্তমানে যে যাত্রী চলাচল করছে তার অর্ধেকের বেশি পরিবহন করা যাবে না। অর্থাৎ ধারনক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহণে চলতে হবে। এছাড়াও উচ্চ সংক্রমণ যুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক, রাজনৈতিক, ও ধর্মীয় অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। মেলা আয়োজনে নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
একইসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা বা আড্ডা বন্ধ করতে হবে; জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০ টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে; মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; করোনায় আক্রান্ত বা লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে; করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে যাওয়া অন্যান্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে; জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী, অসুস্থ ও বয়স ৫৫-ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে; সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে; হোটেলগুলোতে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক মানুষের প্রবেশ বারিত করতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যু হয়। সম্প্রতি করোনায় সংক্রমণ বেড়েছে। মৃত্যুও বেড়েছে। এমতাবস্থায় ১৮ দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়াও প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, অবিলম্বে সারাদেশে এই সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপাতত দুই সপ্তাহ বলবৎ থাকবে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।