সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
জর্ডানের পোশাক খাতে নারী শ্রমিকদের সঙ্গে দক্ষ পুরুষ শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ দক্ষ মানব সম্পদ পাঠানোর মাধ্যমে জর্ডানের সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে আগ্রহী। প্রায় ৭০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক বাংলাদেশ ও জর্ডানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখছে।
রোববার (১৫ মে) জর্ডান সফররত বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জর্ডানের শ্রম মন্ত্রী নায়েফ ইস্তিতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিসেস নাহিদা সোবহান, বোয়েসেল-এর এম.ডি (অতিরিক্ত সচিব) বিল্লাল হোসেনসহ বাংলাদেশ দূতাবাস ও জর্ডান শ্রম মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার একটি অর্থনৈতিক উদীয়মান রাষ্ট্র। বাংলাদেশ নিজ দেশে যেমন বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে একইভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি বিনিয়োগ সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে জর্ডানও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, জর্ডানে পোশাক খাতে কর্মরত বিপুল সংখ্যক দক্ষ শ্রমিকদের সাথে সাথে বাংলাদেশ জর্ডানদের কৃষি, তথ্য প্রযুক্তি, নির্মাণ শিল্প ও ট্যুরিজম খাতে অংশগ্রহণে আগ্রহী।
মন্ত্রী জানান, জর্ডানের অনাবাদী জমি চাষ উপযোগী করতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা ভূমিকা রাখতে পারে। জর্ডান সরকারকে এই দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে বাংলাদেশি কৃষি শ্রমিকদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ করেন। সেইসঙ্গে জর্ডানের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থান সমূহ দর্শনের জন্য বাংলাদেশি টুরিস্টদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানান।
জর্ডানের শ্রম মন্ত্রী নায়েফ ইস্তিতি বলেন, বাংলাদেশ ও জর্ডান উভয় দেশই তার স্বল্প সম্পদ ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্বের কাছে তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। উভয় দেশই নিজ ভূখণ্ডে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ সব সময়ই উচ্চকিত ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, জর্ডানের পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের অর্ধেকের বেশিই বাংলাদেশি এবং তারা নিজস্ব দক্ষতা গুণেই বাংলাদেশ ও জর্ডানের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। বাংলাদেশের যুগোপযোগী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ তার উন্নয়ন লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বেরও তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন।
শ্রম মন্ত্রী নায়েফ ইস্তিতি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জর্ডান আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন। এই সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে উভয় দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে আরও ঘনিষ্ঠ সংলাপ বিনিময়ের উপর জোর দেন। এছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় ও তাদের মধ্যে সংলাপ বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি জর্ডানের বৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।