সব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঘরে ফেরা মানুষ অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যেই ঈদ যাত্রা করছে। বাস টার্মিনাল থেকেই ছাড়তে দেয়া হচ্ছে না কোনো দূরপাল্লার বাস।তবুও কেউ কেউ বিভিন্ন মাধ্যমে বাড়ির পথে যাত্রা করতে পারলেও গাড়ি না থাকায় অধিকাংশ মানুষ পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
চট্টগ্রামে যাত্রার উদ্দেশ্যে সায়দাবাদ এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শফিকুল ইসলাম। বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন ইফতারের পর থেকে। তবে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়েও মেলেনি কাঙ্খিত যানবাহন।তিনি জানান, ঢাকায় কাজের সুবাদে একা থাকি। কাল থেকে ঈদের ছুটি ম্যানেজ করেছি। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানরা আছে, তাই রওনা করেছি। শুনেছি লুকিয়ে হলেও কিছু গাড়ি চলে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি কোনো গাড়িই নেই। মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার থাকলেও কয়েকগুণ বেশি ভাড়া ও ঝুঁকির কথা ভেবে যাচ্ছি না। অপেক্ষা করছি কখন পুলিশ সরবে আর গাড়িগুলো ছাড়বে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা আরিফ মিয়ার। তিনি বলেন, শুনেছি এখানে (সায়দাবাদ) নাকি সব জায়গার বাস পাওয়া যায়, রাত হলে গাড়ি ছাড়ে। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গাড়ি পাইনি। প্রাইভেটকার আর মাইক্রোতে যাওয়ার সাধ্য আমাদের নেই, তাই যেতে পারিনি এখনও। তবে যেহেতু বের হয়েছি রাত ১২টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকব, দেখি কপালে কি আছে।
রাজধানীর সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে এবং তার আশপাশে থাকা কাউন্টারগুলো বন্ধ, তবুও সেখানে মানুষের ভিড়। বাড়ির পথে যাত্রার জন্য একটি যানবাহনের আশায় দাঁড়িয়ে থাকছেন দীর্ঘ সময়। বাস কাউন্টারগুলো বন্ধ থাকলেও কাউন্টারের দায়িত্বরতরা ঘুরছেন আশেপাশে। পুলিশের কড়াকড়ি কমলেই গাড়ি ছাড়ার একটু সুযোগের আশায় তাদের এই সতর্ক অবস্থান।
সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, দু’একটি কাউন্টার ছাড়া সবগুলো বাস কাউন্টারই বন্ধ। যেগুলোও খোলা আছে পুলিশের উপস্থিতিতে পর্দা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। অপেক্ষা শুধু পুলিশের অনুপস্থিতির। পুলিশ চলে গেলে যাত্রীদের আকর্ষণ করার চেষ্টা থাকলেও পুলিশ আসলে মুহূর্তে পরিবর্তন হয় বাস শ্রমিকদের আচরণ।পুলিশ আসলে কাউন্টারে আশেপাশেও দাঁড়াতে দিচ্ছে না তারা। তবে বাস চলাচলে কঠোরতার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছেন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের চালকরা।
লক্ষ্মীপুরগামী মাইক্রোবাসচালক রশিদ মৃধা বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও মাইক্রো চলতে বাধা নাই। তবে রাস্তায় ধরলে কিছু খরচপাতি দিতে হয়। গত কয়েকদিন ধর এভাবেই ট্রিপ মারছি। তবে যাত্রী সবসময় পাওয়া যায় না। এখন রাস্তায় খরচ বেশি, তাই ভাড়াও বেশি নিতে হয়। সেজন্য যাত্রী পাওয়াও কঠিন হয়ে গেছে।