চীনা টিকা পাওয়া গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। চীন থেকে টিকা আনতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। টিকাপ্রাপ্তির ওপরই নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়। দুই ডোজ টিকা দেয়া শেষ করে আগামী দুই মাসেও দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল খোলা এবং সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করা যাবে কি-না, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না।
চীনা টিকা নিয়ে বর্তমানে একধরনের জটিলতা দেখা দিয়েছে। দুই ধাপে চীনের তরফ থেকে বাংলাদেশকে ১১ লাখ টিকা উপহার দেয়া হলেও সম্ভাব্য চুক্তি বা বাণিজ্যিক লেনদেনের টিকাগুলো কখন আসবে নিশ্চিত নয়। এজন্য বসে না থেকে অন্য কোনো সহজলভ্য মাধ্যম থেকে টিকা সংগ্রহ করে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনতে হবে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘চীন থেকে ছয় লাখ ডোজ টিকা আসছে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে সব শিক্ষার্থীর টিকা নিশ্চিত করা হবে। তারপর আবাসিক হল খুলে দেয়া হবে।’
৩১ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘চীনের ভ্যাকসিন যদি চলে আসে, যেটা আমরা এখন পাওয়ার পথে, অ্যাগ্রিমেন্টের পথে। অ্যাগ্রিমেন্ট হওয়ার পর আশা করি, জুন মাসে ৫০ লাখ, জুলাইয়ে ৫০ লাখ এবং আগস্টে ৫০ লাখ ডোজ পেতে পারি। প্রথমদিকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সেই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করবো। শিক্ষকদের আমরা দিচ্ছি। আমরা চাই, ভ্যাকসিন নিয়ে তারা স্বাভাবিক লেখাপড়া শুরু করুক। এক বছর লেখাপড়ায় বিঘ্ন হয়েছে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের তালিকা অনেক আগেই পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। টিকার উপযোগিতা অনুযায়ী সরকার শিক্ষার্থীদের টিকা দেবে। অথবা আমাদের কোনো নির্দেশনা দিলে সেভাবে কাজ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. জামিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘টিকা নিয়ে আমাদের এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি এবং এরকম কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি।’
খোলার বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘নানা জটিলতা ও টিকা স্বল্পতার কারণে এখনো অনেক শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারেননি। দ্বিতীয় দফা রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দিয়ে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল করার বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে পদ্ধতিতে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে দূরে রাখবার পাঁয়তারা বলে মনে করছি। কারণ পরীক্ষা পদ্ধতি খুবই দীর্ঘসূত্রতার বলে জানতে পেরেছি।’