বিইআরসি থেকে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস এলপিজির দাম নির্ধারণের আদেশ দেওয়া হয়েছিল এবং দাম বেশি হওয়ায় সেটা কেউ মানলো কি মানলো না সেটা নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের।
এমন দাম বৃদ্ধির অযৌক্তিকতা বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বিইআরসিকে চিঠিতে অভিযোগ জানান, এলপিজির দাম নির্ধারণের পরও দেশের কোথাও বেধে দেওয়া দামে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে না। এবং লাইসেন্সি আদেশ না মানলে কমিশন আইনের ৪২ এবং ৪৩ ধারা মতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান রয়েছে। ক্যাব চিঠিতে ৪২ এবং ৪৩ ধারা মনে করিয়ে দিয়ে বলছে লাইসেন্সিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
বিইআরসির ঘোষণার পরও এলপিজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বিইআরসির ঘোষণার কোনও প্রভাব বাজারে পড়েনি।
বিইআরসির সদস্য (গ্যাস) মকবুল ই এলাহী বলেন, যদি কেউ সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ করে তাহলে বিইআরসি তার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সবার সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই দাম কার্যকর করা কঠিন হবে। রিটেইলারকে তার দোকানে দামের তালিকা প্রদর্শন করার আদেশ দিয়েছি। এখন তারা যদি সেই দাম প্রদর্শন না করে তাহলে আমাদের দোকানে দোকানে গিয়ে মনিটরিং করা কঠিন। ভোক্তাদের সচেতনতা এখানে খুব জরুরি। দাম প্রদর্শন না করলে তার সেখান থেকে এলপিজি কিনবেই না। তিনি বলেন, ক্যাবের প্রতিনিধিকে আমরা আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু উনারা আসবেন না বলে জানিয়েছেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করা চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আমাদের।
ক্যাবের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে দেশের কোথাও বিইআরসির বেধে দেওয়া দামে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে না। তারা বলছে এটি শুধু বিইআরসি আইনের লঙ্ঘন নয় বরং উচ্চ আদালতের
নির্দেশ প্রতিপালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি। বিইআরসি উচ্চ আদালতের নির্দেশে এলপিজির দাম নির্ধারণ করেছে। ফলে বিআইরসির আদেশ অমান্য করার অর্থই হচ্ছে উচ্চ আদালতের আদেশ না মানা।
এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (লোয়াব) এর সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, কমিশন যে দাম নির্ধারণ করেছে সেই দামের মধ্যে কিছু জিনিস ঠিক হয়নি। আমরা সেটা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য চিঠি দিয়েছি। লকডাউনে তো বসা যাচ্ছে না। আমরা লকডাউনের পর এই নিয়ে হয়তো বসতে পারবো আশা করছি। আমরা আদালতে যেতে চাই না। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চাই।
এছাড়া বিইআরসি সূত্র জানায়, প্রতিমাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম সমন্বয় করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। আগামীকাল ১৯ এপ্রিল কমিটির সভা হবার কথা রয়েছে।
এদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলমের কাছে যে দাম কেউ মানবে না সেই দাম কেন বাড়ানো হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই দাম তো কার্যকর হবে না। শুধু দাম নির্ধারণ করা নয় দাম বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা দেখাও কমিশনের কাজ। সেটা এখন কমিশন করতে পারছে না। তিনি বলেন, যে কমিটি করেছে তা দিয়ে যদি দাম প্রতিমাসে অ্যাডজাস্ট করা হয় তাহলে তো ভোক্তা অধিকার নয়, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা হবে। আর ব্যবসায়ীরা যদি বলে কমিশনের নির্ধারিত দাম না মেনে আবার বসতে চায় তাহলেও তো আইন মানলো না। ঠিক না হলে তারা আদালতে যেতে পারে।