স্বাস্থ্য খাত দুর্বৃত্তায়নের চিরায়ত চক্র থেকে বেরোতে পারছে না। দেশের এ গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিয়মিত বিরতিতে অনিয়ম-দুর্নীতির খবর সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসছে। বরাবরই বলা হয়, জিডিপির অনুপাতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ খুব অপ্রতুল; কিন্তু এই সীমিত বরাদ্দের চেয়েও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এর উল্লেখযোগ্য অংশ লুটপাট।
করোনাভাইরাস মহামারীতে স্বাস্থ্য খাতের নানা অসংগতি, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতার আরও চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। এমতাবস্থায় করোনা মোকাবিলায় সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে হাসপাতালের যে অনিয়মের তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরাে সায়েন্স ও হাসপাতালের এক মাসের কেনাকাটা ঠিক তেমনি ইঙ্গিত বহন করে এই খাতের দুর্নিতির দিকে।
এইখানে যে ব্যবধান দেখা যায় তার কিছু চিত্র তুলে ধরা হলোঃ টিস্যু ফরসেপস এর বাজার দাম ৪০০ টাকা
কেনা হয়েছে ২০,০০০ টাকায়। ইউরিনারি ব্যাগ এর বাজার দাম ৬০ টাকা কেনা হয়েছে ১৩০০ টাকায়। ক্যানুলার
বাজার দাম ৮০ টাকা কেনা হয়েছে ১৪০০ টাকায়। বিশেষ এক ধরনের সুই এর বাজার দাম ২৫০ টাকা কেনা হয়েছে ২৫,০০০ টাকায়। বাঁকানাে কাঁচি এর বাজার দাম ৪০০ টাকা
কেনা হয়েছে ১০,৫০০ টাকায় । ব্লাড ট্রান্সফিউশন এর
বাজার দাম ২২ টাকা কেনা হয়েছে ৯৫ টাকায়।
এ বিষয়ে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, “স্বাস্থ্য খাতে অস্বাভাবিক দামে কেনাকাটা ও দুর্নীতি রয়েছে এটা নতুন করে বলার কিছু নেই ।”
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অবিলম্বে হাসপাতালগুলোর দুর্নীতি তদন্ত ও যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জোরদার উদ্যোগ জরুরি। পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের বর্তমান ৫ শতাংশ বরাদ্দ বাড়িয়ে হাসপাতাল অবকাঠামো নির্মাণে মনোযোগ দিতে হবে। একইসঙ্গে সেই বরাদ্দ যাতে দুর্নীতিতে লোপাট না হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।