ঢাকা, ৭ জুলাই রোববারঃ সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় খাদ্যে ভেজাল। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ভেজালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করলেও ভেজালের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, শুধুমাত্র রোজার মাসেই ভেজাল বিরোধী অভিযান চলমান থাকে। বছরের অন্য সময়ে তেমন কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান থাকেনা। তবে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে আশাবাদী হবার মতো সুখবর। এখন থেকে বিশেষ উপলক্ষ ছাড়াই এবার জোরদার হবে ভেজালবিরোধী অভিযান। এমনকি সংস্থাটির পরিকল্পনা আছে বাজার তদারকিতেও জোর দেওয়ার।
লক্ষণীয়ভাবে অধিদপ্তরের এ বছর পরিচালিত অভিযানসমূহ প্রশংসিত হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এবং খোদ উচ্চ আদালতে। ভেজাল পণ্য নিয়ে আলোচিত ঘটনার মাঝে, উচ্চ আদালত কর্তৃক ৫২টি পণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা, ভেজালবিরোধী অভিযান ও বাজার তদারকি অভিযানগুলো বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। সাধারণ ভোক্তারা আশাবাদী হয়েছেন এসব অভিযানের ফলে। ২০০৯ সালে প্রণীত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সমগ্র দেশব্যাপী জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মোট ৭ হাজার ৩৪৩টি অভিযান চালিয়েছেন। যার ভেতর বাজার তদারকি ও ভেজালবিরোধী অভিযান উল্লেখযোগ্য। এসব অভিযানে দণ্ডের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে ১৯ হাজার ৩০৮টি প্রতিষ্ঠানকে।পাশাপাশি জরিমানা আদায় হয়েছে ১৪ কোটি ৮১ লক্ষ ৪২ হাজার ১৫০ টাকা।
সাধারণ মানুষের বিপুল সমর্থনের ফলে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কার্যালয়সমূহ পূর্বের যে কোন সময়ের চাইতে এখন বেশি অভিযান পরিচালনা করছেন। সাধারণ মানুষ ভোক্তা অধিদপ্তরে তাঁদের অভিযোগ জানাতে পারছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আরেফিন জানিয়েছেন, ‘ পণ্য ও সেবার নতুন নতুন ধরন সৃষ্টি হয়েছে, আর সে অনুযায়ী নতুন নতুন ব্যবসায়ী ও গ্রাহক শ্রেণি তৈরি হচ্ছে। এসব পণ্য ও সেবা বিক্রয় করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি, যেন আইন লঙ্ঘন না হয়। এসব অভিযান কিন্তু আগে হতো না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, গ্রাম এখন শহরে পরিণত হচ্ছে। অভিযান গ্রাম-ইউনিয়ন পর্যায়েও প্রসারিত করতে চাই, যেন প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণ এর উপকারিতা পায়। আমরা এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, যতদিন না বাজার থেকে গ্রাহক হয়রানি ও আইন লঙ্ঘন বন্ধ হচ্ছে, ততদিন আমাদের অভিযান বন্ধ হবে না, বরং দিন দিন তা আরও বাড়বে। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক যে, এসব অভিযানের কারণে গ্রাহক, ব্যবসায়ীসহ আপামর জনগণের মধ্যেও সচেতনতা বাড়ছে ও তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠছেন।’