বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালিয়েছে হাফনিয়াম নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ।প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে এই হ্যাকার গোষ্ঠী।নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম থেকে মনিটর করার সময় এই হামলার বিষয়টি শনাক্ত হয়।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক ও বাংলাদেশ সরকারের ই-গভার্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম-এর প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ জানান, ২০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠানের সার্ভারের মধ্যে হাফনিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ই-মেইলের মাধ্যমে এই হামলা পরিচালনা করা হয়।
তিনি বলেন, হ্যাকার গ্রুপ মাইক্রোসফট মেইল সার্ভার থেকে মেইলের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে। এরা বাংলাদেশের প্রায় দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে হামলা করেছে।
বৃহস্পতিবার ‘বিজিডি ই গভ সার্ট ওয়েবসাইট’-এ (https://www.cirt.gov.bd/) এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।এই প্রতিষ্ঠান সাইবার নিরাপত্তা এবং সংঘটনা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিখাতে গৃহীত সরকারের উদ্যোগগুলোর উন্নয়ন ও বিকাশে সহযোগিতা করে।
এ বিষয়ে তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, হামলার শিকার প্রতিষ্ঠানগুলোয় এটা কীভাবে রিকভার করতে হয়, সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট আমরা দিয়েছি। যাতে সবাই ওই রিপোর্ট দেখে সার্ভারগুলোকে রিস্টোর করতে পারে এবং হ্যাকারের হামলা থেকে মুক্ত হতে পারে।
‘হাফনিয়াম’ গ্রুপটি হ্যাকিংয়ে খুবই দক্ষ ও খুবই বুদ্ধিসম্পন্ন। হাফনিয়াম এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টার্গেট করে হামলা চালিয়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, কিছু ল ফার্ম, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি বিষয়ক ঠিকাদার, থিংক-ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান ও এনজিও।
রিপোর্ট ঘেঁটে দেখা যায়, হ্যাকাররা বাংলাদেশসহ আরও ২২টি দেশ টার্গেট করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, রাশিয়ার মতো দেশও রয়েছে। হ্যাকারদের টার্গেটের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য খাত, আইন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রতিরক্ষা, ভারী ও প্রকৌশল শিল্প, বিজ্ঞান ও শিক্ষা খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ সরকারের ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম নামক সংস্থাটি বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে। তারা একটি বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে, বিভিন্ন আর্থিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাইবার হামলার হুমকি রয়েছে। সংস্থাটি কম্পিউটারে নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন ঘটনা গ্রহণ, মূল্যায়ন এবং সেগুলো সমাধানের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের বিশেষায়িত এই সংস্থা সুরক্ষার বিষয়ে কোনো দুর্বলতা থাকলে সে বিষয়েও পরামর্শও দিয়ে থাকে।