দ্বিগুণ হচ্ছে বিশেষ উন্নয়ন সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা

করোনা পরিস্থিতির কারণে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে আগামী অর্থবছরে বেশি অর্থ পেতে চায় সরকার। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হচ্ছে। বাজেট সহায়তা বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা নামে পরিচিত।


বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগামী অর্থবছরে বাজেট সহায়তা হিসেবে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত প্রাক্কলনের তুলনায় যা দ্বিগুণ। সংশোধিত প্রাক্কলনে বাজেট সহায়তা ১২ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, করোনার প্রভাব মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্থাৎ টিকা দেওয়া, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী অর্থায়নও করছে। এ অবস্থায় সরকার উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা থেকে বেশি করে ঋণ নিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে।


জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক থেকে ৫৫ কোটি ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ১০০ কোটি ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে ৩০ কোটি ডলার, জাপান সরকার থেকে ৩০ কোটি ডলার, ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থা এএফডি থেকে ২০ কোটি ডলার, ইউরোপীয় দেশগুলোর জোটগত ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি ডলার এবং কোরিয়ান সরকার থেকে ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা বাবদ ঋণ নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। সব মিলিয়ে বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা বাবদ ২৯০ কোটি ডলার ঋণ নেবে সরকার। এসব ঋণের গড় সুদহার ২ শতাংশ।


আগামী অর্থবছরে প্রকল্প সহায়তা বাবদ সরকার ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে ৮৮ হাজার কোটি টাকা এবং এডিপিবহির্ভূত প্রকল্প ঋণ হিসেবে ছয় হাজার কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটে মোট এক লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা আসবে বৈদেশিক ঋণ থেকে; যা চলতি অর্থবছরে বাজেটে ৮৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা ছিল। ফলে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি বাড়ছে সরকারের বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা।
বাজেটে তিন ধরনের বৈদেশিক সহায়তা থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি থাকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা। যার কিছু অংশ ঋণ ও কিছু অংশ অনুদান। সুনির্দিষ্ট প্রকল্পের বিপরীতে এসব অর্থ ব্যয় করতে হয়। দ্বিতীয়ত থাকে এডিপিবহির্ভূত প্রকল্প ঋণ। এসব ঋণও নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহার করতে হয়। আর থাকে বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা বা বাজেট সহায়তা সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকল্পে খরচ করার বাধ্যবাধকতা থাকে না। সরকার বাজেট বাস্তবায়নে নিজের সুবিধা অনুযায়ী খরচ করতে পারে। বর্তমান করোনার প্রভাবে সরকার কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণ করতে পারছে না। এ অবস্থায় জরুরি চাহিদা মেটাতে সরকার বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা বেশি নিয়ে খরচ করতে চাইছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা।

এতে ভোক্তার চরমমূল্য দিতে হবে। এই ঋণের টাকা জনগনকে পরিশোধ করতে হবে বিধায় জনগনকে অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রদান করা হতে পারে বলে আশংকা করা যাচ্ছে।