আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে মাদক পাচারের ঘটনা ঘটছে। দেশের বাইরে মাদক পাচারের সময় বড় কয়েকটি চালান আটক করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর নড়েচড়ে বসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।
কুরিয়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এসব চোরাকারবারিকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছে সরকার। যেসব কুরিয়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা, কুরিয়ারে মালামাল পাঠাতে হলে ব্যাংকের মতো প্রাপক ও প্রেরকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক— এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিকভাবে মাদক পাচার রোধে বিমানবন্দরগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো, বিমানবন্দরে পার্সেল কুরিয়ার স্ক্যানিং ব্যবস্থা জোরদার, কুরিয়ারের পাতায় এনআইডি কপি সংযুক্ত, লাইসেন্সবিহীন কুরিয়ার সার্ভিসগুলোকে আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ডাক বিভাগের কাছে লাইসেন্স এবং লাইসেন্স ছাড়া কতগুলো কুরিয়ার সার্ভিস আছে সে তালিকাও চাওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথ এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোক্কাবির হোসেন বলেন, সম্প্রতি বিমানবন্দর ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মাদককারবারিরা বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচার করছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর আমরা খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। বৈঠকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা কিছু সুপারিশ করেছেন। সে অনুযায়ী আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দফতরকে চিঠি দিয়েছি। বিমানবন্দরসহ কুরিয়ার সার্ভিসগুলোকে আরও বেশি গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনার কথা বলেছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোক্কাবির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা; পুলিশ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি; বিজিবি ও কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিমানবন্দর হয়ে বাইরে মাদকের চালান যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাদক শনাক্তকরণে স্থাপিত পার্সেল কুরিয়ার স্ক্যানিং সিস্টেম আরও জোরদার, বিমানবন্দর এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবেশাধিকার আরও সহজ করা এবং ডগ স্কোয়াড মোতায়েন হলে মাদক পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক পাচার হচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা বড় চালান ধরেছি। চক্রের সঙ্গে জড়িতদের নাম ইন্টারপোলে পাঠানো হয়েছে এবং বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের সঙ্গে আমরা বসেছি। তাদেরকে বলেছি, কুরিয়ারের মালামাল পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রেরক ও প্রাপকের এনআইডি কপি সংরক্ষণ করতে হবে। এস এ কুরিয়ার সার্ভিসের কোনো লাইসেন্স নেই। এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে লাইসেন্সবিহীন সব কুরিয়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডাক বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার।