অনলাইন ডেস্ক: ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের কারণে পহেলা বৈশাখের উৎসব বন্ধ ছিল। এর ৪৯ বছর পর নববর্ষের উৎসব বন্ধ থাকলো করোনার কারনে। করোনা রোধে দেশের সব দোকানপাট বন্ধ ঘোষনা করেছে সরকার। যার দারুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের ছোট ব্যবসায়ী এবং বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।
বাঙালির প্রানের উৎসব পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ যেন বাংলার চিরচেনা রূপ। নানা আয়োজন ঘিরে চাঙ্গা হয়ে ওঠে বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতি। প্রতি বছর এই সময়ে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকে উৎসব আয়োজনের ব্যস্ততা। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আজ সবই মলিন।
নববর্ষকে কেন্দ্র করে দেশি পোশাক থেকে শুরু করে মাটির গহনা, শিশুদের নানা পদের খেলনা, গৃহ সামগ্রী, মুড়ি-মুড়কি, ইলিশ, দই, মিষ্টি, তরমুজসহ দেশীয় ফলের চাহিদা বাড়ে। চাহিদাকে কেন্দ্র করে হয় বাণিজ্য। জাতীয় অর্থনীতিতে এর শতভাগই যুক্ত হয়। কিন্তু এবছরের চিত্র সম্পুর্ন ভিন্ন। লকডাউনের কারনে শহরের অভিজাত শপিং মল কিংবা গ্রামের ছোট বড় সব দোকান বন্ধ।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বৈশাখবে কেন্দ্র করে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার দেশীয় বাঁশ, বেত, কাঠের তৈরি জিনিস, মাটির তৈজসপত্র, খেলনা, প্লাস্টিকের খেলনা, বিভিন্ন ধরনের মুড়িমুড়কি, নাড়ু বিক্রি হয়। এছাড়া নববর্ষকে কেন্দ্র করে ইলিশের বেচাকেনা হয় আরও প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার। সব মিলিয়ে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে অর্থনীতির পরিমাণ ৪০ থেকে ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু করোনার কারণে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে থাকা অর্থনীতির পরিমাণ এখন শূন্য।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায় , প্রতিবছর নববর্ষকে কেন্দ্র করে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ কয়েকগুন বাড়লেও এবারের লেনদেনের চিত্র অনেকটাই স্থবির। গত দুই বছর ধরে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে সারাদেশে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য হয়েছে। এ বছর এর পরিমাণ আরও বেশি হওয়ার আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব বন্ধ হয়ে গেছে
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন জানায়, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে বর্ষবরণ উৎসব বন্ধ। দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে অনেকদিন ধরে। এটি অর্থনীতির জন্য বড় ধরণের ক্ষতি। এতে হয়তো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে নিস্ব হয়ে যাবে। ক্ষতি সামলে ওঠার চিন্তায় তারা দিশেহারা। তবে এখন ব্যবসা নয়, জীবন বাঁচানোর চিন্তা করতে হবে।’