ঢাকা, ৩১ মে শুক্রবারঃ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে অবস্থিত পারসোনা অ্যাডামস পার্লার ও পারসোনা বিউটি পার্লার নামের দুটি অতি পরিচিত প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর। ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল ও আফরোজা রহমান।
অভিযানকারী দলটি কানিজ আলমাস খানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পারসোনার ধানমণ্ডি ২৭ শাখায় বিপুল পরিমাণ নকল কসমেটিক্সের খোঁজ পান। এসব পণ্যে আমদানীকারকের স্টিকার কিংবা অন্য কোনো তথ্য ছিল না। কোন দেশের তৈরি সে তথ্যও ছিল না। আমদানীকারকের স্টিকার ছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি কসমেটিক্স ব্যবহার করায় এই দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ করে মোট ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।এসময় মনজুর শাহরিয়ার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘পারসোনায় ব্যবহৃত পণ্যের কোনো জবাবদিহিতা নেই। এটা হয় অবৈধ অথবা নকল। সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স দেওয়ার কোনো তথ্য নেই। এগুলো ভেজাল না কি নকল, তারা সেটা প্রমাণ করতে পারেনি।’ একই এলাকায় অবস্থিত ‘আলভিরাস বিউটি পার্লার’কেও অনুরূপ অভিযোগে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ জুন (২০১৮) বিদেশী পণ্য বলে রূপসজ্জায় নকল ও ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারের দায়ে পারসোনাকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে পারসোনা উইমেনকে আড়াই লাখ এবং পারসোনা অ্যাডামস পার্লারকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
সৌন্দর্য পিয়াসী মানুষের বিশেষত তরুণীদের আস্থার শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠান ফারজানা শাকিলস মেকওভার সেলুন ও পারসোনা। গতকাল বিকেলে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত এসব সেলুনে র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বেরিয়ে এসেছে এক ভয়াবহ চিত্র। পারসোনা ধানমণ্ডি শাখার মতোই গুলশান শাখাতেও উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী সামগ্রী, যেগুলোতে আমদানীকারকের স্টিকার, মেয়াদ কিংবা অন্য ‘কান্ট্রি অব অরিজিন’এর তথ্য ছিল না। একই দৃশ্য দেখা গেছে ফারজানা শাকিলসের ক্ষেত্রেও। প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতর গচ্ছিত রয়েছে সাজানো মেকআপ বক্স সহ বিভিন্ন আইটেমের কসমেটিক্স পণ্য। আকাশচুম্বি মূল্য রাখলেও কয়েক বছর আগেই এসবের মেয়াদ শেষ!
র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম অভিযান শেষে জানিয়েছেন, ‘অভিযানে গিয়ে পারসোনার গুলশান-১ শোরুমে যে কসমেটিক্সে হাত দেই সেটারই মেয়াদোত্তীর্ণ। মেকআপ আইটেমেও নেই মেয়াদ। এ ছাড়া হুবহু নামের নকল আইটেম থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দামেও বিল করার সময় ক্রেতার সঙ্গে করা হচ্ছিল কারসাজি। বলতে গেলে পারসোনার শতভাগ কসমেটিক্স ও মেকআপ আইটেম নকল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়া ফারজানা শাকিলস মেকওভার সেলুনেও প্রায় ৮০ শতাংশ নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিক্স পাওয়া গেছে।’
র্যাব পরিচালিত গতকালের অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করায় গুলশানের পারসোনা এবং ফারজানা শাকিল বিউটি পার্লারকে ১৫ লাখ করে মোট ৩০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসাথে বনানীর সাজাই নামে একটি বিউটি পার্লারে একই অপরাধে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।