বরিশাল-পটুয়াখালী মহা সড়কে লেবুখালী-পায়রা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আগামী রোববার (২৪ অক্টোবর) সেতুটি উদ্বোধন ও জনসাধারণের পারাপারের জন্য উন্মুক্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল হালিম।
তিনি বলেন, রোববার সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন প্রান্ত হতে সংযুক্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী একান্ত সচিব-১ ইসমাত মাহমুদা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রধানমন্ত্রীর এ সম্মতি জানানো হয়েছে।
বরিশাল-পটুয়াখালী মহা সড়কের পায়রা নদীতে ২০১৬ সালে লেবুখালী-পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এরই মধ্যে মূল সেতুর শত ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই সেতুতে বেশ কিছু নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষ করে নদীর মধ্যে এবং পাশে থাকা পিয়ারে যাতে কোনো নৌযান ধাক্কা দিতে না পারে সে জন্য পিয়ারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হচ্ছে। এ ছাড়া বজ্রপাত কিংবা ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুর কোন ক্ষতি হলো কিনা সেটি মনিটরিং করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘লনজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন সেতুটি নির্মাণ করেছে। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি ক্যাবল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝখানে একটি মাত্র পিলার ব্যবহার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ব্রিজের আদলে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় সেতু পায়রা, যা এক্সট্রাডোজ ক্যাবেল সিস্টেমে তৈরি হয়েছে। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে ব্রিজের নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
এদিকে পায়রা সেতু এখন একটি নতুন পর্যটন ও বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধ্যার পর স্থানীয়রা এবং আশপাশের জেলা থেকে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা এ সেতুর দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ সড়কে ভিড় জমান। বিশেষ করে ছুটির দিনে প্রচুর জনসমাগম হয় এখানে।
পরিবার ও বন্ধু বান্ধবসহ ঘুরতে আসছেন অনেকে। এক্সট্রাডোজ ক্যাবলে নির্মিত দৃষ্টি নন্দন স্বপ্নের সেতুর সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলছেন দর্শনার্থীরা। সেতু কেন্দ্রিক আগত নারী-শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
এদিকে সেতুটি উন্মুক্ত হলে ব্যস্ততম সড়কে জনসাধারণের পারাপারে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর দক্ষিণ পাড়ে টোল প্লাজার আগে স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের রাস্তা পারাপারের জন্য একটি ওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবিও জানিয়েছেন অনেকে।