দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা পুরনো ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। রবিবার থেকে এসব লাইসেন্স প্রিন্ট শুরু করে সেনাবাহিনীর অধীন মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)।
আজ সোমবার (১১ অক্টোবর) থেকে গ্রাহকের মাঝে লাইসেন্স বিতরণ করবে কর্তৃপক্ষ। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি আজ (রবিবার) প্রিন্টিং কারখানা পরিদর্শন করেছি। সেনাবাহিনী অলরেডি কাজ শুরু করেছে। প্রতিদিন তারা ৮ হাজারের কম বেশি লাইসেন্স প্রিন্ট করবে। সিরিয়াল অনুযায়ী এসব লাইসেন্স প্রিন্ট হবে। যারা প্রথমে আবেদন করেছেন তাদেরগুলো প্রথমে পাওয়া যাবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেনাবাহিনী সব ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্টিংয়ের কাজ শেষ করবে।’
নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘আমি বিআরটিএর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আমাকে একটি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন ২০১৯ সাল থেকে চলমান ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভোগান্তি আমাকে নিরসন করতে হবে। পাশাপাশি নতুন ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সাজাতে হবে। আমি যোগদানের পরে করোনা মহামারিতে অনেকটা সময় নষ্ট হলেও আপ্রাণ চেষ্টা করেছি দেশের সাধারণ চালকরা যেন আর ভোগান্তিতে না থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পরে ৭-১৫ দিনের মধ্যে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রাহকের হাতে তুলে দিচ্ছি। প্রায় ৩ বছরের মতো ঝুলে থাকা সাড়ে ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্সও আজ থেকে প্রিন্ট করা শুরু হয়েছে। কাল থেকে গ্রাহকের হাতে তুলে দিবো।’
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকা ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত সময়ে প্রদান এবং গ্রাহক ভোগান্তি কমানোর জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে (বিএমটিএফ) স্মার্ট কার্ড প্রস্তুতের কাজ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় দুই বছর ধরে বিআরটিএ’র ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাননি প্রায় সাড়ে ১২ লাখ ড্রাইভার। মোটরযান চালানোর অস্থায়ী অনুমতিপত্র হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ ব্যবহার করছেন চালকরা। এ নিয়ে সড়কে তাদের অনেক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্সের স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আঙুলের ছাপ নেওয়া বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে দুই দফায় সময় বাড়িয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে রাজধানীর পল্লবীতে অবস্থিত মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্সের এনরোলমেন্ট স্টেশনে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে প্রায় এক হাজার আবেদনকারীর আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ বছরে ৪০ লাখ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করবে।