১৮ বছরের ঊর্ধ্বে মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বর্তমানে ভারতে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বের সকল মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আগামী মে মাস থেকে সকল প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়া শুরু হবে। এতে দেশটির প্রায় ৯০ কোটি টিকার প্রয়োজন হবে। এতো সংখ্যক টিকা উৎপাদনে ভারত অন্যদেশে ভ্যাকসিন রপ্তানি করতে পারবে না।
বাংলাদেশকে আর টিকা রপ্তানি করতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ তিন মাস আগেই ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বের সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে গিয়ে চাপের মুখে পড়েছিল। ভ্যাকসিন সংকটে বহু টিকা সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছিল। এবার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলে বিদেশে ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে।
একাধিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে প্রাপ্ত বয়স্কদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু করলে আন্তর্জাতিক মার্কেটে টিকা রপ্তানির বন্ধ হবে। এতে বাংলাদেশ-সহ যেসব দেশ শুধু ভারতে তৈরি টিকার অপেক্ষায় আছে, যথারীতি এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে সেসব দেশেও।
রয়্যাল সোসাইটির ফেলো ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী গগনদীপ কাং বলেন, ভারতে এপ্রিল মাসের মাঝমাঝি সময়ে দেশের মাত্র সাত শতাংশ মানুষকে এক ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। আর দুই ডোজ পেয়েছে মাত্র এক শতাংশ মানুষ। এখনও টিকা দেওয়ার অনেক কাজ বাকি রয়েছে।
জহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ ধর বলেন, ভবিষ্যতে ভারত আর ভ্যাকসিন রপ্তানি করবে না। রপ্তানি আর সম্ভব নয় সেটা কিন্তু স্পষ্ট। এই মুহূর্তে ভারতে যে চাহিদা সেটাই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না, এর ওপর এলিজিবিলিটি ক্রাইটেরিয়া আরও শিথিল করা হলে টিকার ঘাটতি অনেকটাই বেড়ে যাবে। ফলে যে ভ্যাকসিন কূটনীতিটা ভারত শুরু করেছিল, তা আর এখন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
বিশ্বজিৎ ধর আরও বলেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ভারত শুরুর দিকে বিদেশে পাঠিয়ে, কিংবা উপহার দিয়ে যে গুডউইল বা ভাবমূর্তিটা ভারত তখন অর্জন করেছিল, সেটাও কিন্তু এখন হুমকির মুখে।
ভারতে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, আগস্ট বা সেপ্টেম্বরের আগে ভারত বিদেশে এক ডোজ টিকাও রপ্তানি করতে পারবে না।