বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি জরিপ প্রতিবেদনে দেখা গেছে দেশের সরকারি হাসপাতালে প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা প্রায় ০.৩২টি। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা মাত্র ০.৯৬টি। এর মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালে প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা প্রায় ০.৬৪টি।
ডব্লিউএইচও সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি ১ হাজার মানুষের বিপরীতে সাড়ে তিনটি শয্যা থাকতে হবে। সেই হিসেবে, আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় শয্যা সংখ্যা অনেক কম। জরিপটির প্রকল্প পরিচালক ছিলেন আবদুল খালেক। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান জরিপ ২০১৯’-এ এমন চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দেশজ মোট উৎপাদন প্রাক্কলনে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর হালনাগাদ ও নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২১ মে থেকে ২০২১ সালের ১৩ মে পর্যন্ত এ সংক্রান্ত একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে বলেও জরিপে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।প্রতি একজন চিকিৎসকের (ডেন্টাল সার্জন বাদে) বিপরীতে মাত্র ০.৮৫ জন সেবিকা রয়েছে। ডেন্টাল সার্জনদের অন্তর্ভুক্ত করলে প্রতি একজন চিকিৎসকের বিপরীতে সেবিকার সংখ্যা দাঁড়ায় ০.৮৩ জন। প্রতি ৩.৪৭টি শয্যার জন্য একজন সেবিকা দায়িত্ব পালন করছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বাংলাদেশে মোট ১৬ হাজার ৯৭৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ছিল। তার মধ্যে রোগ নির্ণয় কেন্দ্র ১০ হাজার ২৯১টি (৬০.৬১ শতাংশ), হাসপাতাল ৪ হাজার ৪৫২টি (২৬.২২ শতাংশ) এবং মেডিকেল ক্লিনিক ১ হাজার ৩৯৭টি (৮.২৩ শতাংশ)। অন্যদিকে ডেন্টাল ক্লিনিকের সংখ্যা ৮৩৯টি (৪.৯৯ শতাংশ) এমনটাই উঠে এসেছে বেসরকারি খাতে নিবন্ধিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জরিপে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় এককভাবে ৭৭.৩৩ শতাংশ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তারপর যথাক্রমে রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে ১৯.৮৫ শতাংশ এবং ক্লিনিকগুলোয় ৩.৭০ শতাংশ কর্মসংস্থার তৈরি হয়েছে। নতুন পূর্ণকালীন কর্মসংস্থানের মধ্যে ডেন্টাল ক্লিনিকের আওতায় কর্মসংস্থানের প্রাক্কলিত হিসাব ছিল ০.১২ শতাংশ। মোট পূর্ণকালীন নতুন কর্মসংস্থানের মধ্যে চিকিৎসকের ৪ হাজার ৫৯০টি, সেবিকার ৪ হাজার ৭২১টি এবং ডেন্টাল সার্জনের ৪৯টি পূর্ণকালীন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলেও জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় পূর্ণকালীন কর্মসংস্থান সৃষ্টির তথ্য তুলে ধরে জরিপে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের জুনে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় মোট ২ লাখ ৮৯ হাজার ১২৬ জন কাজ করতেন, বিপরীতে ২০১৮ সালের জুনে সেখানে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৪১ জন কাজ করতেন।