করোনা মহামারীর জন্য বাজার ব্যাবস্হা আনেকটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ বছরের শুরুর দিকে বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও তা ধরে রাখা যায়নি। বাজারে ক্রেতা আছে কিন্তু পণ্য নেই। যদিও বা কোনও প্রযুক্তি পণ্য মেলে, দাম স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি। বাজার কবে আগের অবস্থায় ফিরবে সে বিষয়ে প্রযুক্তি বাজার সংশ্লিষ্টরা কোনও আশার বাণী শোনাতে পারছেন না।
হার্ডড্রাইভ, মাদারবোর্ড এর মতো অনেক পণ্য নকল বা কপি হচ্ছে। বাজারে আসছে ১০-২০ বছর আগের প্রসেসর। পুরনো ল্যাপটপ, হার্ডড্রাইভ ও মাদারবোর্ড মিলছে এলিফ্যান্টরোড কেন্দ্রিক প্রযুক্তি বাজারগুলোতে।
ডেল। এছাড়া এইচপির সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। অন্যান্য ব্র্যান্ড (আসুস, এসার, লেনেভো, গিগাবাইট, এমএসআই ইত্যাদি) বিভিন্ন সময়ে বাজারে ল্যাপটপ ছেড়ে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাচ্ছে। সংকট রয়েছে ইন্টেল ও এএমডি ব্র্যান্ডের প্রসেসরের। এই সুযোগে বাজারে আসতে শুরু করেছে ইন্টেলের পিন প্রসেসর। মাদারবোর্ড, মনিটর, আইপি ক্যামেরার ঘাটতি বাজারে দীর্ঘদিন ধরে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যুগ্ম সম্পাদক মুজাহিদ আল-বেরুনী সুজন বলেন, বাজারে চিপ ও প্যানেল সংকট রয়েছে। প্যানেল সংকটের কারণে মনিটরের দাম অনেক বেড়েছে। বিশ্ববাজারে প্যানেলের দাম ৫৬ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব দেশের বাজারে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫ হাজার ৫০০ টাকা দামের মনিটর (১৮ দশমিক ৫ ইঞ্চি) এখন ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কম দামি ল্যাপটপের দাম ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে। ৩৫ হাজার টাকা দামের ল্যাপটপ এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৩ হাজার টাকায়। ক্ষেত্র বিশেষে আরও বেশি।’
স্মার্ট টেকনোলিজের পণ্য ব্যবস্থাপক (ডাব্লিউডি) মাহবুবুর রহমান বললেন, ১২০ ও ২৪০ জিবি (গিগাবাইট) এসএসডি ড্রাইভ বেশি নকল হচ্ছে। ৩ হাজার টাকা দামের আসল ১২০ জিবি কপি ডাব্লিউডি ড্রাইভ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়, আর ৩ হাজার ৫০০ টাকা দামের ২৪০ জিবির কপি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকায়। আসল ও কপি ডাব্লিউডি এসএসডি ড্রাইভের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ক্রেতারা ঠিক বুঝতে পারেন না। তিনি আসল এসএসডি হার্ডড্রাইভ কেনার সময় প্যাকেটের রং ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের স্টিকার দেখে কেনার পরামর্শ দেন।
ইন্টেলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চিপ সংকটের কারণে ইন্টেলের প্রসেসর বাজারে খুবই কম আসছে। ফলে সব জায়গায় এর প্রভাব পড়েছে। বাজারে এই সময়ে ইন্টেলের পিন প্রসেসর ঢুকছে, পেন্টিয়াম টু, থ্রি ও ফোর প্রসেসর।’ এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে শুনেছি। এটা বৈধভাবে আসছে না। ইন্টেল এখন এই মানের পণ্য তৈরি ও বিক্রি করে না।’
গিগাবাইটের কান্ট্রি ম্যানেজার খাজা মো. আনাস খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা চাই এগুলো বন্ধ হোক। কপি পণ্য কিনলে ক্রেতারা ভুক্তভোগী হবেন। ওয়ারেন্টিসহ পণ্য কিনলে কম্পিউটার ভালো থাকবে, পারফরমেন্স ভালো থাকবে।’ তিনি সবাইকে আসল গিগাবাইট পণ্য কেনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বিসিএসসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছি।’