বেতননির্ধারণী সফটওয়্যারের ত্রুটির কারণে শিক্ষকদের বেতন বোনাস প্রাপ্তিতে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে।আর এ কারণে আসন্ন ঈদে প্রায় ৫২ কোটি টাকার উৎসবভাতা থেকে বঞ্চিত হবেন শিক্ষকরা। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সারা দেশের শিক্ষকদের মধ্যে।
শিক্ষকদের বেতননির্ধারণের সরকারি সফটওয়্যার ‘আইবাস প্লাস প্লাস’-এ ফিক্সেশন না হওয়ায় শিক্ষকরা বেতন ও বিভিন্ন ভাতা মিলিয়ে বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় দুই থেকে তিন হাজার টাকা কম পাচ্ছেন। আসছে ঈদুল ফিতরে সারা দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষকের প্রত্যেকে এক হাজার ৩০০ টাকা করে উৎসবভাতা কম পাবেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম জানান, মাঠপর্যায়ে দু-একটি জায়গায় বেতন ফিক্সেশন হলেও বেশির ভাগ উপজেলাতেই তা হয়নি। তাই আগামী ১০ মের মধ্যে আইবাস প্লাস প্লাস-এ বেতন ফিক্সেশনের জন্য নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছিল। এতে সহকারী শিক্ষকদের ১১ হাজার টাকা স্কেলে মূল বেতন পাওয়ার কথা। অথচ এক বছরেও এই শিক্ষকদের বেতন ১৩তম গ্রেডে ফিক্সেশন করা যায়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘আইবাস ++’ সংযুক্ত করা হয়। এরপর জেলা, উপজেলা ও ডিডিও আইডি থেকে বেতন নির্ধারণের সুযোগ দেয়া হয়। সফটওয়্যারে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রির চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের উন্নীত স্কেলের বেতন নির্ধারণের অপশন সংযোজনের জন্য আইবাস++ প্রকল্প দফতরকে পত্র দেয়া হয়েছে। অপশন সংযোজন করার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।
শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবি দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের ৩ গ্রেড বেতনবৈষম্য নিয়ে সহকারী শিক্ষকরা ২০১৩ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারেও তাদের বৈষম্য নিরসনের দাবি স্থান পায়। জাতীয় নির্বাচনের পরপর নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে শিক্ষকরা আবারো আন্দোলন শুরু করলে সরকার প্রাথমিকভাবে বৈষম্য কিছুটা কমাতে সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করে।