ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: এক কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
এমনকি ডিএসইতে লেনদেনের শেষদিকে প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অর্থাৎ ক্রেতা সংকটে পড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ক্রেতা সংকট দেখা দেওয়ায় অনেকে কম দামে শেয়ার বিক্রির আগ্রহ দেখিয়েও বিক্রি করতে পারেননি। ফলে লেনদেনও আগের দিনের তুলনায় কম হয়েছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের ৭ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। প্রথম এক ঘণ্টা লেনদেনের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। কিন্তু বেলা ১১টার পর থেকে দরপতন হতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের।
লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। আর লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় বাছবিচারহীনভাবে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ দাম কমিয়ে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির আদেশ দিতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ দাম কামার পরও এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। ফলে লেনদেনে শেষ হওয়ার আগে প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৬৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর আগে গত সপ্তাহের শেষ চার কার্যদিবসের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৩০ পয়েন্ট। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ২১ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা দরপতনের পর এক কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা দেওয়ার পর আবার পতন হলো শেয়ারবাজারে।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপশি পতনে হয়েছে অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে সব খাত মিলে ৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৪টির। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৫৭ কোটি ৪৬ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৪৩ কোটি ৫৬ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৮৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ২৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনালী পেপার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, জিনেক্স ইনফোসিস, নাহি অ্যালুমেনিয়াম, ফরচুন সুজ, ওরিয়ন ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টির এবং ৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।