।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
ভোক্তা অধিকার রক্ষায় বাজারে তদারকি অভিযান চালিয়ে ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর দেশব্যাপী ২৫টি জেলায় অভিযান চালানো হয়। বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের নেতৃত্বে ৭৭টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে।
পাশাপাশি অধিদপ্তরে ভোক্তারা যেসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, সেগুলো থেকে ১৫টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয় এই দুই দিনে। আইন অনুযায়ী কোনো ভোক্তা যদি পণ্য বা সেবা কিনে প্রতারিত হন তাহলে তিনি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে যে জরিমানা করা হয় ভোক্তা তার ২৫ শতাংশ পেয়ে থাকেন। সেই হিসাবে ১৫ অভিযোগের বিপরীতে ভোক্তারা বুঝে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের নেতৃত্বে গতকাল রাজশাহী, মৌলভীবাজার, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ, মাগুরা, নোয়াখালী, শেরপুর, মুন্সীগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে বাজার তদারকি করা হয়। এ সময় ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৭ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। ওই দিন লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করার অপরাধে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫১ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় এবং ৯ জন অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫ শতাংশ হিসেবে ১২ হাজার ৭৫০ টাকা প্রদান করা হয়।
এরপর ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ অভিযান চালানো হয় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নেত্রকোণা, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে। এ সময় ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। অন্যদিকে লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির অপরাধে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় এবং ৬ জন অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫ শতাংশ হিসেবে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা প্রদান করা হয়।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা, ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রের কারচুপি, ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়, সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্য, অবহেলা দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ঘটানো ও পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে এসব ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে জানান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন, মৎস্য কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, বাজার কর্মকর্তা, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিনিধি এবং কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এসব তদারকি কার্যে সহায়তা প্রদান করেন। বাজার তদারকিকালে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোক্তাদের মধ্যে লিফলেট ও প্যাম্পলেট বিতরণ করা হয়েছে।
ছবি : ফাইল ফটো, ইন্টারনেট