বাজারে পেঁয়াজ আসে রাতে কিন্তু তার রসিদ নাকি আসে সকালে। এমনই অদ্ভুত যুক্তি দিয়ে ইচ্ছেমতো দাম বেধে, ভোক্তার ইচ্ছা অনিচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা। এ নৈরাজ্য হাতেনাতে ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শুধু জরিমানাতেই সমাধান নয় বদলাতে হবে মানসিকতাও।
এদিকে, রমজানে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে কর ফাঁকি দিয়ে আনা বিদেশি পণ্যও।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) কারওয়ান বাজারে অভিযানে যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সেখানে একটি দোকানে গিয়ে দেখা মেলে ‘গাওয়া’ নামে একটি বিদেশি পাণীয়। কিন্তু পণ্যের গায়ে নেই আমদানিকারকের পরিচয়, লেখা নেই দাম, এমনকি দোকানদার দেখাতে পারলেন না ভাউচারও। কোনো উপায় না পেয়ে কখনও দায় চাপালেন দোকান মালিকের ওপর, কখনও বাদামতলীর আড়তের ওপর।
সরকারি তদারকিতে হাতে নাতে ধরা পড়ায় করা হলো জরিমানা, কিন্তু আটক করা হলো না পণ্যটি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘বাদামতলীতে এই পণ্যগুলো যারা আমদানি করে নিয়ে আসে এবং তারা যেখান থেকে কিনে নিয়ে আসে, আমরা পরবর্তীতে সেখানেও অভিযান চালাব।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টিম গেল চাল আর মুরগির বাজারেও। নোংরা পরিবেশ ঠিক করতে বলা হলো খেঁজুরের দোকানগুলোকেও।
এই নৈরাজ্য পেঁয়াজ বাজারের। বলা হচ্ছে পেঁয়াজ আসে রাতে, আর তার রসিদ নাকি আসে সকালে। অথচ শ্যামবাজার থেকে কারওয়ানবাজারের দূরত্ব মাত্র আট কিলোমিটার।
অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমি শ্যামবাজারে কথা বললাম। রশিদ ছাড়া তারা কোনো পণ্য বিক্রি করে না। তাহলে আসল গড়মিলটা এখানেই।’
বাজারভর্তি পেঁয়াজ থাকলেও রসিদ নেই কারো কাছে। দায়সারা বক্তব্যে তাই অনিয়ম আড়ালের আপ্রাণ চেষ্টা ব্যবসায়ীদের।
এক দোকান মালিক বলেন, ‘অনেক সময় রাতে গাড়ি মাল নামিয়ে দিয়ে যায়, কিন্তু রশিদ দেয় সকালে এসে। এরকম প্রায় সব সময় হয়।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে মাঠে নেমেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও।