নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখতে তেলের মিলগুলোতে তদারকি করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বুধবার ভোজ্যতেলের পাইকারি ব্যবসায়ী, ডিলার এবং মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষ এ তথ্য জানান ভোক্তা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বৈঠকে মিল মালিকদের মধ্যে সিটি গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, গ্লোব গ্রুপের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বাবলু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ভোজ্যতেলের ডিলার এবং পাইকারী ব্যবসায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন।
কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা কণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান।
বৈঠক শুরুতেই ডিলার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ভোজ্যতেলের মিলগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল সরবরাহ করছে না। সাপ্লাই অর্ডার (এসও) করলে দীর্ঘ দিন ট্রাক বসিয়ে রেখে দেয়া হয়। এমনকি ১৫ থেকে এক মাস পরেও তেলের ডেলিভারি পাওয়া যায় না। এছাড়া সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দাম নেয়া হয়। পাশাপাশি তেল নেবার সময় কোন পাকা রশিদ দেয় না মিলগুলো।
একজন ভোজ্যতেল পাইকারী ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, মিলগেটের বাহিরে দ্রুত তেলের ট্রাকের সিরিয়াল নিতে হলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। অন্যথায় ১৫-২০ দিন সিরিয়ালে ট্রাক বসিয়ে রাখা হয়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বিকার করেছেন ভোজ্যতেলের মিলগুলোর কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, ডিলারদের চাহিদা মত তেল সরবরাহ করে থাকেন তারা। সাপ্লাই অর্ডার (এসও) পাওয়া মাত্র যথাসময়ে তেল সরবরাহ করেন। এবং সরকার নির্ধারিত দামেই তেল সরবরাহ করছেন।
তারা আরও বলেন, তেলের কোন ঘাটতি নেই। সারাদেশে প্রতিদিনই পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ হচ্ছে।
মিলগেটের বাহিরে চাঁদাবাজির বিষয়ে তারা বলেন, এ বিষয়ে তারা অবগত নন।
বৈঠক শেষে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে ৬টি সিদ্ধান্তের কথা জানান ভোক্তা অধিকারের ডিজি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সিদ্ধান্ত:
– ডিলার কর্তৃক যতগুলো সাপ্লাই অর্ডার (এসও) মিল মালিকদের কাছে যাবে তাতে দাম লেখা থাকবে।
-৯ মার্চ এর সাপ্লাই অর্ডার (এসও) আগামী ২৪ মার্চের মধ্যে মিল কর্তৃপক্ষকে ক্লিয়ার করতে হবে।
-তেল দেশের বাহিরে যাচ্ছে কি না সে বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দেয়া হবে।
-নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকায় তেলবাহি ট্রাকের যানযট এবং চাঁদাবাজির বিষয়টি স্থানীয় প্রসাশনকে অবহিত করা হবে।
-ভোক্তা অধিকার এবং অন্যান্য বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে ভোজ্যতেলের মিলগুলোর দেয়া তথ্যের তদারকি করা হবে।
– খুচরা বিক্রেতা, পাইকারি বিক্রেতা, ডিলার এবং মিল মালিকদের পাকা রশিদ নিশ্চিত করতে হবে।
সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তা অধিকারের চাহিদা মত ভোজ্যতেলের মিলগুলোর কর্তৃপক্ষ গত তিন মাসের তেলের মজুদ, উৎপাদন এবং বিক্রির হিসাব জমা দিয়েছে। আগামীকাল থেকে মিলগুলোতে গিয়ে এসব তথ্যের তদারকি করা হবে। যদি গড়মিল পাওয়া যায় তবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে পর্যাপ্ত তেল মজুদ আছে। রমজান পর্যন্ত দাম বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই। সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে সেই দামে তেল বিক্রি করতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরইউ