নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকাঃ
বিআরটিএ-র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মামলা ও সার্জেন্টের দেওয়া মামলা একই আইনের আওতায় হলেও, ম্যাজিস্ট্রেটের অতিরিক্ত ক্ষমতাবলে কোথাও কোথাও জরুরি পদক্ষেপ নিতে পারেন। যেটা সার্জেন্টের পক্ষে সম্ভব হয় না বলেন, পুলিশের সার্জেন্ট ফারুক হুসাইন।
বিআরটিএ কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্ট এবং পুলিশের সার্জেন্ট কর্তৃক নিয়মিত টহল ভিত্তিক মামলা আলাদা দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হলেও একই আইনের আওতায় বলে জানান এই সার্জেন্ট।
‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ অনুসরণে সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে নিয়মিত মামলা দিচ্ছেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও বাংলাদেশ পুলিশের সার্জেন্ট।
বিআরটিএর এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তার।
তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে, শৃঙ্খলা ও নিয়ম ভঙ্গের বিরুদ্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বিআরটিএ-র নের্তৃত্বে।
একই আইনে নিয়মিত রাস্তায় যানবাহন পরিচালনা করছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্জেন্ট। দেশজুড়ে রয়েছে তাদের তৎপরতা। প্রতিদিন মামলা হচ্ছে হাজারেরও বেশি। যানবাহনের অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা কিংবা নিয়ম বহির্ভূত যেকোনো যানবাহনকে জরিমানা করে আসছে সংস্থাটি।
বিআরটিএ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তার ভোক্তা কণ্ঠকে জানান, বিআরটিএ থেকে মোট ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে।
‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর বহির্ভূত আচরণে যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছান তারা।
নিয়মিত মোবাইল কোর্ট এবং তদারকি বাড়ছে উল্লেখ করে বিআরটিএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসের মামলার তুলনায় মার্চের সংখ্যা বেশি।
মার্চে মোট ১হাজার ছয় শ’ ৪৬টি মামলা দায়ের করেন। মামলার বিপরীতে ৩৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে সংগঠনটি।
অন্যদিকে ফেব্রুয়ারিতে ১৬৫টি কোর্ট পরিচালনায় ১হাজার ১২৬টি মামলা দায়ের করা হয়। যেখানে জরিমানা করা হয়েছিল ২৭ লাখ ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা।
গাড়ির ফিটনেস, কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ রাস্তায় চলার ক্ষেত্রে গাড়িচালকদের অনিয়ম চোখে পড়লে সাথে সাথে তারা অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।
তিনি আরো জানান, তাদের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন পুলিশ ও সার্জেন্ট।
’সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’এর উল্লেখযোগ্য অংশ হলো-
ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান ও গণপরিবহন চালনার বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ৪ এবং ৫ লঙ্ঘনের দণ্ড, যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪ এবং ৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোটরযান চালানোর ওপর বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১২ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ডে বলা হচ্ছে, যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১২ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
রুট পারমিট ছাড়া পাবলিক প্লেসে পরিবহন যান ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ২৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড, যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৮ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মোটরযানের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ধারা ৪৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড, যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।
’সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ আইনটি চতুর্দশ অধ্যায়ে বিভক্ত রয়েছে। এতে মোট ১২৬টি ধারা এবং অধীনে কয়েকটি উপধারা রয়েছে।
১ নভেম্বর, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ হইতে ’সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ আইনটি কার্যকর হয়ে আসছে।