বিক্রির জন্য রাখা মিষ্টিতে দুর্গন্ধ, অতপর…

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিক্রির জন্য কাঁচের শোকেজে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বাহারী রকমের মিষ্টি। শোকেজ খুলতেই নাক সিটকে তুললেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ফাহমিনা আক্তার। কারণ মিষ্টি থেকে বের হচ্ছিল দুর্গন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে দিতে নির্দেশ দিলেন দোকান মালিককে।

সোমবার রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও বাজারে এই ঘটনা ঘটে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে সেখানে অভিযান চালায়। এসময় একটি কনফেকশনারীর দোকানে হরেক রকমের সাজানো মিষ্টির দিকে নজর দেন ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা ফাহমিনা আক্তার। তিনি মিষ্টির দুর্গন্ধ পেয়ে দোকান মালিককে নষ্ট মিষ্টি ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। দোকান মালিকও তার নির্দেশ মত দুর্গন্ধযুক্ত মিষ্টি সঙ্গে সঙ্গে ফেলে দেন। পরে দোকানদারকে প্রাথমিকভাবে জরিমানা না করে সতর্ক করে দেন। পরবর্তীতে এমন ভুল করলে জরিমানা সহ শাস্তির আওয়াতায় আনা হবে বলে জানান ফাহমিনা আক্তার।

পরে বাজার ঘুরে বিভিন্ন খুচরা পণ্যের দাম এবং খোলা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা যাচাই করেন ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা। এসময় হ্যান্ড মাইকে সকল বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে ফাহমিনা আক্তার জানান, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য রাখতে হবে এবং বিক্রি করতে হবে, দাম পণ্যের গায়ে উল্লেখ থাকতে হবে, খোলা নিত্যপণ্যের দামের তালিকা দোকানের সামনে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে। প্রাথমিকভাবে সবাইকে সতর্ক করে দেয়া হলো। আইন মেনে ব্যবসা না করলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এর আগে আগারগাঁও এলাকার শাহিন ফার্মেসীতে অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল। সেসময় তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী পরিচালক (মেট্রো) মো. মাগফুর রহমান। এই দুই কর্মকর্তা ফার্মেসীর তাকগুলোতে চিরুনি অভিযান চালান। বের হতে থাকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ। পরে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় দোষী সাবস্ত করে ফার্মেসীর কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এই টাকা নগদ পরিশোধ করে নিষ্কৃতি পেলেও মেয়াদ উত্তীর্ণ সকল ওষুধ জব্দ করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় বলা রয়েছে:
মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করলে অনূর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ড বা অনাধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

একই সময়ে পাশের ফ্যামিলি শপ নামের এক দোকানে অভিযান চালান সহকারি পরিচালক ফাহমিনা আক্তার। সেই দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ লাবান, এলমারিয়া পাওয়া যায়। তাকেও ৫১ ধারায় দোষী সাবস্ত করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এই টাকা নগদ আদায় করা হয়।

অভিযানের বিষয়ে সহকারি পরিচালক ফাহমিনা আক্তার বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান অব্যহত থাকবে। ফ্যামিলি শপকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। যাতে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য কোন ভাবেই দোকানে না রাখে। পরবর্তীতে এমন ভুল করলে আরও বড় শাস্তির আওয়াতায় আনা হবে।

আরইউ