ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। দাম বৃদ্ধির আইনগত আনুষ্ঠানিকতা ‘গণশুনানি’র জন্য ১৮ মে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিইআরসি সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা নির্ধারণ করে। বিপিডিবি তার প্রস্তাবে প্রতি ইউনিটের দাম ৮.৫৮ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি হলে ৯.১৪ টাকা এবং ১২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলে ৯.২৭ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গণশুনানিতে অংশ নিতে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ২৮ এপ্রিলের মধ্যে নাম লেখানোর জন্য বলা হয়েছে বিইআরসির পক্ষ থেকে। বিদ্যুতের একক ক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। নিজেরা উৎপাদনের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি ও বেসরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনছে। ৫টি বিতরণ কোম্পানির কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করে আসছে। আর নিজেরা ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের শহরাঞ্চলে বিতরণ করে যাচ্ছে।
বিপিডিবির পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চাহিদা মতো গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে গেছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ ছিল ২.১৩ টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১৬ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, কয়লার মুসক বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালে ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে ৪.২৪ টাকায়। পাইকারি দাম না বাড়লে ২০২২ সালে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হবে বিপিডিবির। গ্যাসের প্রস্তাবিত দাম বৃদ্ধির প্রভাব ছাড়াই এই অবস্থা হবে। সম্প্রতি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছে পেট্রোবাংলা। গ্যাস দাম বাড়লে সেই বাড়তি অর্থ যোগ করে দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে বিপিডিবি।
বিপিডিবির জনসংযোগ পরিদফতরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণে লোকসান দিয়ে যাচ্ছে বিপিডিবি। তাই পাইকারি দাম সমন্বয়ের একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এই অবস্থায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা মনে করি গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়াও অনেক বিকল্প রয়েছে।