বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের আদেশে ভোক্তার স্বার্থ ও অধিকার খর্ব হয়েই আসছে। বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসের মূল্যহার নির্ধারণে কমিশন কখনোই পক্ষপাতহীন ছিল না। বিইআরসি আইনে কমিশনের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো ভোক্তাস্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা এবং নিজের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। অথচ আগের কমিশনের ধারাবাহিকতায় বর্তমান কমিশনও আগের মতোই সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলো। বিগত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আদেশই তার প্রমাণ। প্রতি বছরই ভোক্তাকে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির শিকার হতে হচ্ছে। ভোগব্যয় বাড়ছে। আয় বাড়েনি। ফলে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমছে। ব্যয় সংকোচন করে চলতে হচ্ছে। তাতে বাজার সংকোচন হচ্ছে। পণ্য/সেবার ক্রয়-বিক্রয়ের পরিমাণ কমছে। সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি হবে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এর কোনো হিসাব-নিকাশ কোথাও নেই। তাহলে ভোক্তা অধিকার খর্ব করে বিদ্যুতের মূল্য তিন হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধিতে কার কী লাভ হলো?
কমিশনকে প্রদত্ত ২৪.০২.২০২০ তারিখের পত্রে ক্যাবের বক্তব্য ছিল
১. গ্যাস কিংবা বিদ্যুতের মূল্যহার নির্ধারণ আদেশে আগের কমিশন পক্ষপাতহীন ছিল না। ফলে ওই আদেশাবলিতে ভোক্তাস্বার্থ ও অধিকার খর্ব হয়। তাই বর্তমান কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। ২. আগের কমিশন ১ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আদেশ কার্যকর করার জন্য অতিজরুরি গণশুনানি শেষসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে এবং শুনানি চলাকালেই মূল্যবৃদ্ধির আদেশ চূড়ান্ত করে। অথচ জারি করেনি। ৩. ক্যাব পাইকারি বিদ্যুৎ সরবরাহের নানা পর্যায়ে নানা অযৌক্তিক ব্যয় চিহ্নিত করে। তার পরিমাণ প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। এই অযৌক্তিক ব্যয় সমন্বয়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি না করার প্রস্তাব করা হয়। আগের কমিশন তা আমলে নেয়নি। ন্যায্য ও যৌক্তিক হলেও সময়-স্বল্পতার কারণে বর্তমান কমিশনের পক্ষে তা বিবেচনা করা সম্ভব হবে না এমন ধারণা পাওয়া যায়। ফলে আগের কমিশনের রেখে যাওয়া আদেশ মতোই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আদেশ হবে। কমিশনের এমন বিবেচনায় ভোক্তারা বিস্মিত। ৪. ওই পত্রে নিম্নের বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়ার জন্য বর্তমান কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়
ক. চিহ্নিত অযৌক্তিক ব্যয়গুলো কেন অযৌক্তিক নয়, খ. বিদ্যুৎ বাণিজ্য লসে চলে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে সে লস মোকাবিলা করে। তাহলে লসে চলা ইউটিলিটিকে বেশি মুনাফা দিতে ভর্তুকি এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কেন অন্যায় ও অযৌক্তিক নয়, গ. পেট্রোবাংলা, পিডিবি বা আরইবি কোম্পানি নয়, সরকারি সেবা সংস্থা। বাণিজ্যিক নয়। তাদের ব্যয়ভার আগে সরকার বহন করত, এখন বহন করে ভোক্তা। সে ব্যয়ের সঙ্গে বাড়তি মুনাফা দিয়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কেন অন্যায় ও অযৌক্তিক নয়, ঙ. ভাড়াবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাড়া এ বছরে প্রায় ২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা। তা সমন্বয়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কেন অন্যায় ও অযৌক্তিক নয়, চ. সরকারের পলিসির কারণে বিদ্যুৎ লসে বিক্রি করা হয়। এ লস সমন্বয়ে ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কেন অন্যায় ও অযৌক্তিক নয় এবং ছ. বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিলের অর্থে বিদ্যুতের মূল্য না কমিয়ে বৃদ্ধি কেন অন্যায় ও অযৌক্তিক নয়?
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আদেশে এ বছর ঘাটতি ধরা হয় ৬ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। সে ঘাটতি ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা সরকারি ভর্তুকি এবং ৩ হাজার ৬৪ কোটি টাকা মূল্যবৃদ্ধি দ্বারা সমন্বয় করা হয়। অযৌক্তিক ব্যয় এবং সরকারের পলিসিজনিত লস রাজস্ব চাহিদাভুক্ত না করে বিদ্যুতের মূল্যহার পরিবর্তনের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। ফলে আদেশ ন্যায্য ও যৌক্তিক হয়নি।
ওই আদেশে যেসব অসংগতি দেখা যায়, তার মধ্যে অন্যতম
১. ভাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অথচ ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ অযৌক্তিক ব্যয় ২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা ধরে মূল্যহার বৃদ্ধি করা হলো। ২. ৩০ জুন ২০২০ তারিখের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ পিডিবির ১৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবসরের আদেশ হয়েছে। অথচ এসব কেন্দ্রের ব্যয় সমন্বয় করে রাজস্ব ঘাটতি কমানো হয়নি। কিন্তু ৩১ বছরের ঊর্ধ্বে ১ হাজার ৪৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আছে এবং ২০ বছরের ওপর রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের আয়ুষ্কাল শেষ। অবচয় ব্যয় উসুল হলেও মূল্যহারে স্থির ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করায় মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। ৩. অব্যবহৃত/স্বল্প ব্যবহৃত সম্পদের ওপর অবচয় ব্যয় ধরায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে কমিশনপ্রণীত প্রবিধানমালাকে অজুহাত হিসেবে দেখানো হয়। তাতে অবচয় ব্যয় ধরার মৌলিক বিধান উপেক্ষিত। বাস্তবে দেখা যায়, কেনো এক বিতরণ ইউটিলিটির সম্পদ ২০০৯ সালে ছিল চার হাজার কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ১৪ হাজার কোটি টাকা। সম্পদের এ প্রবৃদ্ধি বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। অথচ এ প্রবৃদ্ধি অবচয় ব্যয়বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। ৪. সরকারি সংস্থা হলেও বা কোম্পানি লসে থাকলেও মুনাফাভিত্তিক মূল্যহার প্রদান ওই প্রবিধানমালাসম্মত। কোম্পানির বেতন-ভাতা কোম্পানির মতো হলেও পারফরম্যান্সভিত্তিক নয়। লাভ-লসের সঙ্গে সম্পর্কহীন, যা কোম্পানির মূলনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। ৫. তছরুপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে ব্যক্তি খাত বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরাসরি নিজস্ব মালিকানায় জ্বালানি আমদানির সুযোগ না দেওয়া এবং সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি পরিহার করে সব ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি নিশ্চিত করার প্রস্তাব না গ্রহণ করার যুক্তিতে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে সরকারের নীতি, আইন, মন্ত্রণালয় ও সংস্থা জড়িত। অথচ কমিশন আইনে সরকারকে পরামর্শ/নির্দেশনা দেওয়ার সুযোগ কমিশনের আছে। ভাড়াবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি মেয়াদ বৃদ্ধির ওপর নিষেধাজ্ঞা তারই প্রমাণ। ৬. বিদ্যুৎ খাত উন্নয়ন তহবিলের অর্থ বিনিয়োগে বিদ্যুতের মূল্য কমার কথা। অথচ বাড়ছে। তাই প্রস্তাব ছিল, তহবিল বিলুপ্ত করা, নইলে ওই তহবিলের গাইডলাইনস ২০১৯ বাতিল করে আগের গাইডলাইনস বলবৎ করা। তহবিলের অর্থ বিনিয়োগে ভোক্তার সুবিধাদি বিবেচনায় তহবিল বিলুপ্ত করা হয়নি। আবার গাইডলাইনস ২০১৯ বাতিলের জন্য আদালতে মামলা রয়েছে। এ অজুহাতে গাইডলাইনসও বাতিল হয়নি। অথচ কথিত সুবিধাদি আগের গাইডলাইনস মতে অনুদান হিসেবে তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের ফল। বর্তমান গাইডলাইনস মতে, সুদে বিনিয়োগের ফল নয়। গাইডলাইনস ২০১৯ বাতিলের জন্য আদালতে কোনো মামলা নেই। ফলে উভয় যুক্তিই ভিত্তিহীন। ৭. ওই তহবিলের অর্থ সুদে অবৈধভাবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করা হয়েছে। তা বৈধ করার জন্য পিডিবির নামে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শেয়ার বরাদ্দের প্রস্তাব ছিল। প্রস্তাবটি আরও পর্যালোচনার অজুহাতে গ্রহণ করা হয়নি। অর্থ প্রদান বৈধতা পায়নি। ৮. সরকারি অর্থে সাবসিডি ও ভোক্তার অর্থে ক্রস-সাবসিডি দ্বারা ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাজস্ব ঘাটতি সমন্বয়ের প্রস্তাব আদেশে অনুপস্থিত। এ ব্যাপারে রাজস্ব ঘাটতি ৫ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। ৯. এনএলডিসির বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ এবং মেরিট অর্ডার লোড ডেসপ্যাচ নীতি অনুয়ায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদায় সামঞ্জস্য সঠিকভাবে রক্ষা করা হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখার জন্য পক্ষগণ প্রতিনিধি নিয়ে স্বার্থ-সংঘাতমুক্ত কমিটি গঠন করার প্রস্তাব ছিল। আদেশে পিডিবিকে কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। অথচ কমিটির কার্যক্রমে দুর্নীতি খতিয়ে দেখার বিষয়টি রাখা হয়নি। কমিটিতে দুজন বহিঃবিশেষজ্ঞ থাকলেও তাদের মনোনয়ন কে দেবেন, উল্লেখ নেই। কমিটিতে ভোক্তা প্রতিনিধি নেই। কমিটি স্বার্থ-সংঘাতমুক্ত হয়নি। অযৌক্তিক ব্যয় চিহ্নিত ও নির্ধারণের জন্যও অনুরূপ কমিটি করার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু করা হয়নি। ১০. বিতরণে ২৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও আদেশে ভোক্তাপ্রতি ডিমান্ড চার্জ ২০-১০০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ওই উদ্বৃত্ত রাজস্বে সঞ্চালন ঘাটতি সমন্বয় হয়েও উদ্বৃত্ত থাকত। অথচ সঞ্চালন চার্জ বৃদ্ধিতেও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি পেল। ১১. মানসম্মত বিদু্যুৎপ্রাপ্তিতে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনের জন্য ইউনিফাইড মূল্যহার পরিবর্তন করে স্থানভেদে বিদ্যুতের ভিন্ন ভিন্ন মূল্যহার করার প্রস্তাব ছিল। সে প্রস্তাবও গৃহীত হয়নি।
ভাড়াবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় চুক্তির প্রথম মেয়াদে প্রদত্ত ক্যাপাসিটি চার্জেই পরিশোধ হয়। সুতরাং পরে সেই নির্মাণ ব্যয় উসুলের অজুহাতে আর কোনো ক্যাপাসিটি চার্জ আদায়ের সুযোগ নেই। ফলে পাইকারি বিদ্যুতের রাজস্ব চাহিদায় অন্তর্ভুক্ত ক্যাপাসিটি চার্জ ২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা বাদ দিয়ে বিদ্যুতের মূল্যহার নির্ধারণের প্রস্তাব ছিল। সে প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। ভোক্তার নিজস্ব অনুদানে সাশ্রয়ী মূল্যে পিডিবিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ক্যাবের প্রস্তাবে কমিশনের আদেশে বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন তহবিল গঠিত হয়। পরে গাইডলাইনস ২০১৯ বলবৎ হয়। ফলে তহবিলের অর্থ অনুদানের পরিবর্তে সুদে পিডিবিসহ অন্যান্য উৎপাদন ইউটিলিটিতেও বিনিয়োগ হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের মূল্য কমার পরিবর্তে বাড়াচ্ছে। ভোক্তা প্রতারিত হচ্ছে। তাই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ওই তহবিল বিলুপ্ত অথবা গাইডলাইনস ২০১৯ বাতিল করার প্রস্তাব ছিল। শুধু উল্লিখিত দুটি প্রস্তাব গৃহীত হলে রাজস্ব ঘাটতি কমপক্ষে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা কম হতো এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হতো না। আদেশ ন্যায্য ও যৌক্তিক হতো।
সরকারের পলিসির কারণে পাইকারি বিদ্যুতের প্রায় ৭০ শতাংশ লসে বিক্রি করা হয়। ফলে এ বছর লস হবে ৫ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। এ লসের ২ হাজার ৯০ কোটি টাকা সমন্বয় হবে ভোক্তার অর্থে। অর্থাৎ ক্রস-সাবসিডিতে। ফলে অবশিষ্ট ঘাটতি ৩ হাজার ৬১ কোটি টাকা। কিন্তু সরকারি সাবসিডি ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ভর্তুকিতে সরকার ৫২৯ কোটি টাকা বেশি দিয়েছে। তা ছাড়া ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিতরণ অবকাঠামো আন-ইকোনমিক্যালি সম্প্রসারণ হচ্ছে। তাতেও চলতি বছরে বিতরণে কমবেশি দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এ বৃদ্ধি বিতরণ চার্জেই সমন্বয় হতো এবং বিতরণে রাজস্ব উদ্বৃত্ত থাকত ২৭৫ কোটি টাকা। অথচ ডিমান্ড চার্জ বৃদ্ধি করে বিতরণে রাজস্ব বৃদ্ধি করা হলো। ওপরে বর্ণিত তথ্যাদিতে জানা যায়, উৎপাদন, সঞ্চালন কিংবা বিতরণ ব্যয়বৃদ্ধির অজুহাতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতা ছিল না। তাই মূল্যবৃদ্ধির আদেশ ন্যায্য ও যৌক্তিক হয়নি। সে আদেশে ভোক্তা যেমন একদিকে ঠকেছে, অন্যদিকে সরকারও তেমন ঠকেছে। ন্যায্যমূল্যে পণ্য বা সেবা তথা বিদ্যুৎ বা জ্বালানি পাওয়া ভোক্তার অধিকার। সে অধিকার জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত এবং রাষ্ট্র কর্তৃক ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা আইন ২০০৯ এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩ দ্বারা সুরক্ষিত। কিন্তু বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আদেশ সে অধিকার খর্ব করেছে।
লেখক : অধ্যাপক ও জ্বালানি উপদেষ্টা : কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) [email protected] (৯ মার্চ ২০২০, দৈনিক দেশ রূপান্তরে প্রকাশিত)