নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামের বিষয়টি এখন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের হাতে। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী এমন কোন কিছু করবেন না যাতে (ভোক্তাদের) বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা করেন।
এ সময়ে নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের লক্ষ্য নির্ধারিত, কাদের জন্য ভর্তুকি দিতে চাই, কতো দর রাখতে চাই। আমাদের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বিদ্যুতের মূল্য দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তাই ভর্তুকি দেওয়া হয়, তবে আমি ভর্তুকি বলি না, বলি বিনিয়োগ। কারণ তারা এই টাকা যাতে নিজের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে। ছেলে মেয়েদের শিক্ষার কাজে খরচ করতে পারে।
এ সময় নসরুল হামিদ বলেন, এলএনজিতে ৩০ হাজার কোটি টাকা কর দিচ্ছি, এ কর না দিলেই তো হয়ে যায়। বিদ্যুতেও (ভর্তুকি) ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো হবে। আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।
তিনি বলেন, আমরা স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। প্রথম পরিকল্পনা ছিল দ্রুত বিদ্যুৎ দেবো, তেল দিয়ে উৎপাদনে গেছি। সেখানে সফল হয়েছি, শিল্পের উৎপাদন বেড়েছে, মানুষের জীবনমান বেড়েছে। শিল্প মালিকরা গ্রামে যেখানে কম দামে জমি পেয়েছে সেখানে কারখানা করেছে।
তিনি বলেন, সার্ভে করার পরও ড্রিল করে অনেক সময় গ্যাস পাওয়া যায় না। অনেকে মনে করেন সমুদ্রে গেলেই কালকে গ্যাস পাওয়া যাবে। এমন ধারণা সঠিক নয়, গ্যাস পেলেও আনতে ১০ বছর সময় লাগবে। সাগরে মাল্ট্রি ক্লেইন সার্ভে হচ্ছে, তারপর দেখব এটা আনা সাশ্রয়ী হবে কিনা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্যাস দিচ্ছি, চাহিদা আরও বেড়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন শিল্প কারখানা হচ্ছে। এখনও ৫৫০ থেকে ৬০০ শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংযোগের আবেদন পড়ে রয়েছে। আমরা চাই শিল্প হোক কর্মসংস্থান বাড়ুক। গ্যাস আমদানি করতে খরচ পড়ছে ৫৯ টাকা। গ্যাস বিক্রি করছি ৭ টাকায়। সংকটের কারণে ইতালি এসি বন্ধ রেখেছে, এমন হতে পারে আমরা টাকা দিলেও গ্যাস মিলছে না।
ক্যাবের উদ্যোগকে প্রশংসা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্যাবের উদ্যোগটা ভালো, আমি কিছু অংশ দেখেছি। তবে আরও গঠনমূলক পরামর্শ দিতে পারেন, যাতে কাজে আসে। আরও একটু আধুনিক করা যায় কিনা ভেবে দেখা দরকার। কালকে যদি ৮শ মিলিয়ন গ্যাস আমদানি বন্ধ করি, তাহলে কি হবে, সব শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা কি শিল্প বন্ধ করে দেবো?
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডঃ এম সামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ূন কবীর ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, ভূ-তত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার রাজিব হায়দার, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন প্রমুখ।
এসআর