অনলাইন ডেস্ক: বিশ্ব জুড়ে মহামারী আকার ধারনকারী করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ জন। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজারের বেশি লোকের।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সোমবার সকাল পর্যন্ত হালনাগাদ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ জন, যার মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯০ জন।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৪ হাজার। দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২২ হাজার ১৬০।
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঘরবন্দি ও লকডাউনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ আরও আগে নেয়া গেলে অনেক জীবন বাঁচানো যেতো বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শীর্ষ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধ অনুযায়ী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ফেব্রুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা জারি করার আহ্বান জানিয়েছিলেন কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এছাড়া তিন সপ্তাহের মধ্যে ইতালিতে রোববার সবচেয়ে কম মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনেও দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিতীয়বারের মতো সবচেয়ে কম হয়েছে। এতে ইউরোপে আশার ঝলক দেখা গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইতালিতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িযেছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৬৩ জনে আর মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৮৯৯ জন। যুক্তরাষ্ট্রের পর ইতালিতেই মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে স্পেন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৬ জন। ১৭ হাজার ৪৮৯ মৃত্যু নিয়ে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে আছে দেশটি।
নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে থাকায় দেশটি নির্মাণ খাত, কারখানা ইত্যাদির মতো বাসা থেকে যেসব কাজ করা যায় না, সেই খাতগুলোর কর্মীদের কঠোর সুরক্ষা বিধি মেনে কাজে ফেরার অনুমতি দিয়েছে।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় বিশ্বে চতুর্থ অবস্থান আছে ফ্রান্স। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৩৩ হাজার ৬৭২ ও মৃত্যুর সংখ্যা ১৪ হাজার ৪১২।
সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি ফ্রান্সজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ ১০ মে পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন।
অন্যদিকে মহামারী সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যে চীন থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় সেই চীন এখন আছে সপ্তম স্থানে। নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার ক্ষেত্রে দেশটির উদাহরণ এখন অনেক দেশের জন্যই অনুসরণযোগ্য মডেল হয়ে উঠেছে।
দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ২১৩ ও মৃত্যুর সংখ্যা তিন হাজার ৩৪৫।
দেশটি স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনা সফলভাবে হ্রাস করতে পারলেও বিদেশ ফেরত আক্রান্তদের নিয়ে নতুন সমস্যায় পড়েছে। রোববার দেশটিতে নতুন করে ১০৮ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এটিই নতুন আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা আর এদের প্রায় সবাই বিদেশ ফেরত।
এশিয়ায় নভেল করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে আছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭১ হাজার ৬৮৬ জন ও মৃতের সংখ্যা চার হাজার ৪৭৪ জন।
আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বিবেচনায় আরও তিনটি দেশ শীর্ষে থাকা দেশগুলোর কাতারে উঠে এসেছে। এর মধ্যে তুরস্কে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৯৫৬ জন ও মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১৯৮ জন। বেলজিয়ামে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ৫৮৯ জন ও মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৩০৯ জন।