খুলনা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা থেকে খুলনা বাস ভাড়া ছিল ৮০ টাকা। এখন নিচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়ায় ১০৭ টাকা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে নিচ্ছে ১৩০ টাকা। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বাসের কন্ডাক্টররা তাদের ইচ্ছা মতো ভাড়া নিয়েই যাচ্ছেন। আর অসহায়ের মতো যাত্রীদের পকেট কাটা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকালে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় নিয়মিত আসা যাওয়া করা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা জুবায়ের মোস্তাফিজ।
ভাড়া বাড়াতে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা করে তিনি বলেন, বেতনের অর্ধেকই চলে যাচ্ছে বাস ভাড়ায়। আসতে ১৩০ টাকা যেতে ১৩০ টাকা মোট ২৬০ টাকা প্রতিদিন বাস ভাড়াতে শেষ। বাসায় পৌঁছাতে অন্যান্য যানবাহনের ভাড়া মিলে ৩০০ টাকা প্রতিদিনই লাগছে।
আরেক যাত্রী বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা এনামুল কবীর বলেন, খুলনা থেকে পিরোজপুরের দূরত্ব ৬২ কিলোমিটার। সরকারের নির্ধারিত হিসাবে ভাড়া হয় ১.৮×৬২ = ১১১.৬ টাকা। কিন্তু নেওয়া হচ্ছে ১৩০ টাকা। আমাদের সঙ্গে জুলুম করা হচ্ছে কিন্তু দেখার কেউ নেই। ভুক্তভোগী একাধিক যাত্রীরা বলেন, আয় বাড়েনি, কিন্তু ভাড়া বেড়েছে, অন্যান্য খরচ বেড়েছে। এতে আমাদের ওপর একটি বিশাল চাপ তৈরি করেছে। মাঝে-মধ্যে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে বাকযুদ্ধ হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
জ্বালানি তেল ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন ধর্মঘটের মুখে বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণার পর সোমবার (৮ নভেম্বর) থেকেই নতুন ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত এ নতুন ভাড়াকে কেন্দ্র করে পরিবহনকর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। কারণ বাসের ক্ষেত্রে সরকার ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ালেও আগের তুলনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীবান্ধব ভাড়া পুনঃনির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাত্রীরা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম মিজানুর রশীদ বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১ টাকা ৮০ পয়সা কিলোমিটার হিসেবে মালিক সমিতির কাছে ভাড়ার চার্ট দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি নিলে সেটা অন্যায় হবে। যারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে তাদের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হবে। যাতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।