এক জরিপে উঠে এসেছে করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাস আগের চেয়ে ‘নড়বড়ে’ হয়ে গেছে।
কোভিড-১৯ অ্যান্ড বিজনেস কনফিডেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপে রোববার এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান।সানেম পরিচালিত এই জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, মহামারীর মধ্যে ব্যবসা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার ছিল ৫৮ শতাংশ।
জরিপে যেসব প্রশ্ন করা হয় তার মধ্যে রয়েছে, মহামারীকালে কেমন চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলো; সরকার ঘোষিত সোয়া লাখ কোটি টাকার ওপরে প্রণোদনা কী পেলেন বিনিয়োগকারীরা; সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কত পেল; ব্যবসা শুরুর ব্যয় কমেছে কিনা।
সেলিম রায়হান বলেন, গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রথমবারের মতো দেশের ব্যবসা পরিস্থিতি জানার জন্য এই জরিপ পরিচালনা শুরু করা হয়।সর্বশেষ জরিপটি গত মাসে পরিচালনা করা হয়। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের পরিস্থিতি জানতে সারাদেশের পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ীদের ওপর পরিচালিত এই জরিপে দেখা যায়, এই সময়ে ব্যবসা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, বলেন, মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাসে আগের চেয়ে ‘চোট’ তৈরি করেছে। আগের আত্মবিশ্বাসীদের অনেকের মনোবল নড়বড়ে হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন এই সময়ে নতুন বিনিয়োগ কিংবা বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অর্থলগ্নীতেও বেশিরভাগ আস্থা পাচ্ছেন না।
জরিপের তথ্য তুলে ধরে সানেম বলেছে, প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে নিলেও দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে পিছিয়ে পড়বে দেশের বহু প্রতিষ্ঠান।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বড় বলে তারা সবার ‘কণ্ঠস্বর’ও হয়ে উঠে। তাই সরকারি প্রণোদনা বণ্টনের সময় কণ্ঠস্বর হিসেবে তারাই বেশি সুবিধা পেয়েছে।“
এখনো ৪১ শতাংশ ব্যবসায়ীর আত্মবিশ্বাস অবশিষ্ট থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, অতি আত্মবিশ্বাস বিপদ ডেকে আনতে পারে। তার মতে, ভারতের এমন বিপর্যন্ত অবস্থা অতি আত্মবিশ্বাসের কারণেই।
বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা আবাসিক কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।