ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে ভূগর্ভস্থ পানির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙন রোধ, ভূমি পুনরুদ্ধার, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে যা দেশের আপামর জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
বিশ্ব পানি দিবস’ উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ভূগর্ভস্থ পানি: অদৃশ্য সম্পদ, দৃশ্যমান প্রভাব’ সময়োপযোগী ও যথাযথ হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সহিষ্ণু ব-দ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন করেছে। এই পরিকল্পনার স্বাদু পানির উপকৌশল ১.৪ এর আওতায় ভূগর্ভস্থ পানি সুরক্ষা অঞ্চল নির্ধারণ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা রয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা লাভ করবে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর এই দিবসে মিঠা পানির গুরুত্বের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এসডিজি-৬ অর্জনকে গতিশীল করার প্রয়াস নেওয়া হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য পানি এবং স্যানিটেশন প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাই এসডিজি-৬ এর লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বের ২ বিলিয়ন মানুষ এখনও নিরাপদ পানীয় জলের অভাবে রয়েছেন, ৩.৬ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশনের অভাবে আছেন এবং ২.৩ বিলিয়ন মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি হতে বঞ্চিত রয়েছেন।
তিনি বলেন, যদিও ভূগর্ভস্থ পানি দৃশ্যমান নয় কিন্তু এর প্রভাব সর্বত্র বিদ্যমান। ভূগর্ভস্থ পানি আমাদের তরল মিঠা পানির সবচেয়ে বড় উৎস। ভূগর্ভস্থ পানি আমাদের জন্য পানীয় জল সরবরাহ, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, কৃষিকাজ, শিল্প ও বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখে।
শেখ হাসিনা বলেন, এদিকে মানুষের পানির চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া পানির দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমগ্র পানি সম্পদের ওপর চাপ বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়; যা ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখে, নদীর ভিত্তিপ্রবাহ বজায় রাখে, ভূমির অবনমন ও সমুদ্রের পানির অনুপ্রবেশ রোধ করে। তাই জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রক্রিয়ার সাথে ভূগর্ভস্থ পানির যোগসূত্র অতীব নিবিড়। সুতরাং এই মূল্যবান সম্পদকে টেকসইভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব পানি দিবসে প্রত্যাশা করেন যে, ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও সুষ্ঠু পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
‘বিশ্ব পানি দিবস-২০২২’ উপলক্ষে তিনি নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।