আগামী ২ জুন বসছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে নানা সীমাবদ্ধতায় অনেক খাতেই বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ হয়নি। সেসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে নতুন বছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আগামী ৩ জুন সংসদে বাজেট উপস্থাপিত হবে।
খাদ্য নিরাপত্তাসহ নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ পাচ্ছে এ খাত। সব মিলিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ পাচ্ছে সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
সরকারিভাবে খাদ্যশস্য বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে খাদ্যের বিনিময়ে নগদ অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে। এতে দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ খরচ হলেও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সেই টাকা রয়ে গেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ অনেকটা গত অর্থবছরের মতোই থাকছে।
খাদ্য মজুত কম থাকাসহ নানান কারণে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়। ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘টিআর-কাবিখা’র মতো কর্মসূচিতে খাদ্য সরবরাহ করতে পারেনি তারা।
২০২১-২২ অর্থবছরে এই বরাদ্দ ৩০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তা বাড়তে বা কমতে পারে। এছাড়া এর বাইরে টাকার প্রয়োজন হলে থোক বরাদ্দ থেকেও আর্থিক প্রয়োজন মেটানো হবে। তবে সার্বিকভাবে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি বাজেটে গুরুত্ব পাবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলের বরাদ্দ দেয়া অর্থের অনেকটাই উদ্বৃত্ত রয়ে গেছে। কিন্তু সামনে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা কর্মসূচির প্রয়োজন হতে পারে। ২০২০-২১ বছরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটে বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য সচিব বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দ অনেকটা গত বছরের মতোই থাকবে। গত বছর বাজেট থাকা সত্ত্বেও আমরা খাদ্য সংগ্রহ করতে পরিনি। আমাদের বাজেট কিছুটা উদ্বৃত্ত ছিল। আমরা আশা করছি এ বছর আমাদের উদ্বৃত্ত থাকবে না। প্রায় একই বাজেটে আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব। আমাদের বাজেট অল্প কিছু বাড়ছে। গতবার যেহেতু সম্পূর্ণ বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারিনি, আমাদের বাজেট রয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি যতটুকু আমাদের বৃদ্ধি হবে সেটি দিয়ে ভালোভাবেই আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারব। চলতি অর্থবছরে ১৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে, এবার ৩০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট হচ্ছে। টিআর, কাবিখা সম্পূর্ণরূপে টাকায় কনভার্ট করেছি, যেটা ত্রাণ মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী আমরা যে খাদ্যটা সরবরাহ করি এবার তো সেটা করিনি। টিআর, কাবিখার টাকা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের থেকে দেয়া হয়েছে, সুতরাং আমাদের টাকা রয়ে গেছে।’
এছাড়া অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর সফল বাস্তবায়ন, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা এবং ক্ষতিপূরণ, অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজ প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন, সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা, ব্যাপক কর্মসৃজন ও পল্লী উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ, গৃহহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহনির্মাণ (মুজিববর্ষের প্রধান কার্যক্রম), শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়া হবে।