নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভোজ্যতেলের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ফের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে সোম বা মঙ্গলবার তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে সংশ্লিষ্ট সত্রে জানাগেছে।
এদিকে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দেশের সয়াবিনের উৎস ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে সয়াবিনের দাম বেড়েই চলেছে। দাম বাড়ার কারণ আরেকটি কারণ চীনের অতিরিক্ত তেল সংগ্রহ। এজন্য তারা আগস্ট মাসেই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।
রাজধানীর সূত্রাপুর, রায়সাহেব বাজার, শ্যামবাজারসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৪ থেকে ১৪৬ টাকায় ও বোতলজাত সয়াবিন ১৫০ থেকে ১৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৬৬০ থেকে ৭২০ টাকায়। প্রতি লিটার সুপার পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমাদের ভোজ্যতেলের বাজার আমদানি নির্ভর। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম না কমলে দেশের বাজারে কমবে না। করোনা মহামারির কারণে শ্রমিক সংকটে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় গত জুন-জুলাই মৌসুমে পাম অয়েল উৎপাদন আশানুরূপ হয়নি। একইসঙ্গে চীনের হঠাৎ অতিরিক্ত তেল সংগ্রহ তেলের বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনায় মৌসুম শুরু হবে। তাই এর আগে ভোজ্যতেলের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে দেশের সবচেয়ে বড় তেল রিফাইনারি কোম্পানি সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেশন অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিত সাহা বলেন, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের একটা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। সরকার যেটা নির্ধারণ করে দেয় সেটার ওপর কথা বলা যায় না। তবে আমরা বলেছিলাম- আমাদের কিছু কথা আছে। তখন বলেছে, পরবর্তী মিটিংয়ে যা বলার বলতে। এখন দুই-তিন দিনের মধ্যে সম্ভবত আগামী সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের তেল ব্যবসায়ীদের একটা বৈঠক হবে। সেখানে আমরা যা বলার বলবো।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। আমরা আশঙ্কা করছি আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে তেলের দাম বাড়ছে ভবিষ্যতে আরো দাম বাড়বে। এজন্য আগেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। এখন দেখা যাক মন্ত্রণালয় কি করে। দামের বিষয়ে সোম ও মঙ্গলবার জানতে পারবেন। তবে সরকার যদি দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়- তাহলে ডিউটিতে একটু ছাড় দিলে ভোক্তারা সুবিধা পেতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত দাম অনুযায়ী খুচরা বাজারে সুপার পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে না বলে ভোক্তারা অভিযোগ করেছেন। তারা জানান, সরকার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১২৯ টাকা নির্ধারণ করলেও বিক্রি হচ্ছে ১৪৬ টাকায়। আর সুপার পাম অয়েল ১১৬ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে তা ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকার ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর প্রায় মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু বাজারে তার কোনো প্রতিফলন নেই।