সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট:
ভোজ্য তেলের অনিয়ন্ত্রিত বাজার নিয়ন্ত্রনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহীকতায় ভোজ্য তেল আমদানিতে ভ্যাট কমানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানাগেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক শীর্ষকর্মকর্তা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ১ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরে এ বিষয়ে একটি চিঠি আসে। এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠিতে বলা হয়, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দামের ঊর্ধমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের প্রভাবে স্থানীয় বাজারে ভোজ্য তেলের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল প্রায় ১৫৩০ মার্কিন ডলার এবং প্রতি টন অপরিশোধিত পাম তেল আন্তর্জাতিক বাজারে ১৫০৮ থেকে ১৫২০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৪০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা এবং প্রতি লিটার খোলা পাম তেল ১০০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে আমদানিকৃত অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল স্থানীয় মিলে পরিশোধিত হয়ে বাজারে প্রবেশ করলে প্রতি লিটার সয়াবিন ও পাম তেলের দাম আরও বাড়বে। ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় ভোজ্য তেলের বর্তমান দাম অস্বাভাবিক বলে প্রতীয়মান।
অপরিশোধিত তেলের বর্তমান মূল্য বিবেচনায় গত ৬ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। সে হিসেবে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, অপরিশোধিত পাম তেল ও পামওলিন আমদানিতে এর শুল্কায়নযোগ্য দামের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলেও এ খাতে সরকারের কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কমার সম্ভাবনা নেই। সেই সাথে অত্যাবশ্যকীয় এ পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় গতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমানে আরোপিত উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের ওপর ১৫ শতাংশ ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের ওপর ১৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট হতে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন। তাই অত্যাবশ্যকীয় ভোজ্য তেলের বাজার মূল্য এবং সরবরাহ লাইনে স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে অব্যাহতি প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
এর আগে ২০২১ সালে ১৯ এপ্রিল সয়াবিন তেল ও পাম তেল আমদানিতে ৪ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার করেছিল এনবিআর। ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিন, পাম এবং পামওলিন তেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আগাম কর (এটি), উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বিক্রয় ও সরবরাহ পর্যায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট রয়েছে। এর মধ্যে ধাপে ধাপে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর প্রত্যাহার করা হয়।