লকডাউনের ফলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছেন মুচি থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষ তিনবেলা দু-মুঠো ভাত যোগাতেও হিমশিম খাচ্ছেন।কেউ বলছে চরম অর্থকষ্টের কথা, কেউ বলেছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা। কেউ আবার স্বপ্ন সাজানোর পথে হোঁচট খাওয়ার কথা বলতে গিয়ে বলছেন।
তিন সপ্তাহ আগে মিরপুর ১০ নম্বর মোড়ে ফলের দোকান দিয়েছেন মো. রেজাউল শেখ। প্রথম সপ্তাহ লাভের মুখ দেখলেও দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি কম, এর মধ্যে আবার কিছু মালামালে পচন ধরেছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তিনি।
মহেশ দাস নামের এক লোক জানান, মিরপুর ১০ নম্বর মোড়ে জুতা রং ও সেলাইয়ের কাজ করেন তিনি। কিন্তু লকডাউনে পরিবার নিয়ে বেশ বিপাকে আছেন। একদিকে যেমন দোকান খুলে ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না, অন্যদিকে তেমন কাজও পাচ্ছেন না। দিনশেষে ৪০ থেকে ৫০ টাকার বেশি ঘরে তুলতে পারছেন না বলে জানান মহেশ। এতে অনেকটা অর্ধাহারে পরিবার নিয়ে দিনাতিপাত করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন,‘সকালে রুটি আর ভাজি খেয়ে বাইর হইছি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় পানি নিয়ে আসছি। সেই পানি খেয়েই এখনো আছি। লকডাউন বহুত কষ্টের মধ্যে ফেলে দিছে। সকাল থেকে পুলিশ তিনবার উঠাই দিছে, তারপরও আইসা বসছি। বইসা ১০ টাকা ১০ টাকা, মোট ২০ টাকার কাজ করলাম। এখন আমি যে দুপুরে কিছু খাবো, ওইটাও আর সম্ভব না।’
রাজধানীর দক্ষিণ মণিপুর এলাকার শাহাবুদ্দিন ফার্নিচারে ১০ জনের বেশি লোক কাজ করেন। লকডাউনেও তাদের কাজ থেমে নেই। দোকানের শাটার বন্ধ করে চলে তাদের কাজ। কাজ চললেও সেসব ফার্নিচার বিক্রি করতে পারছেন না তারা।
ফার্নিচার দোকানের রং মিস্ত্রি মো. রফিকুল বলেন, ‘আমরা কাজ করতেছি, কিন্তু মহাজন কোনো মাল বিক্রি করতে পারছেন না। এবার প্রথম যে লকডাউন দিয়েছে, তারপর থেকেই বিক্রি কমে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ফার্নিচার আমরা বানিয়েও বিক্রি করি, আবার অর্ডার দিলেও সেটা বানিয়ে দিই। কিন্তু বর্তমানে কোনো কাজের অর্ডার পাইতেছি না। আমরা এখন যা বানাচ্ছি, সেগুলো স্টোরেজে রাখতেছি।’
এখন পর্যন্ত সবারই বেতন হচ্ছে। এভাবে ঘাটতি দিতে থাকলে সামনের দিনগুলোয় কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন রফিকুল।