আগুনের পাশাপাশি বিস্ফোরণের ঝুঁকির মুখে থাকা বিপজ্জনক এবং হেজার্ড কার্গোর ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চার গুণ হারে ভাড়া বসানোর পর এবার নৌবাহিনীর অনুমোদন ছাড়াই মিথ্যা ঘোষণায় বিপজ্জনক কোনো পণ্য আনা হচ্ছে কি না তারও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। শনিবার এ ধরনের একটি কার্গোবাহী কন্টেইনারে বিস্ফোরণ এবং আগুনের ঘটনার পর বন্দরের এই কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
গত শনিবার (২২ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের ৮ নম্বর ইয়ার্ডে রাখা একটি কন্টেইনারের হঠাৎ বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায় চট্টগ্রাম বন্দর। অভিযোগ উঠেছে কন্টেইনারটিতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকলেও তার কোনো আগাম ঘোষণা ছিল না। এমনকি কন্টেইনারটিতে বিপজ্জনক কার্গো হিসাবে কোনো সতর্কতামূলক স্টিকারও ছিল না।সাইফ মেরিটাইম লিমিটেডে চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জহির বলেন, এটা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব যদি আমরা সঠিকভাবে হ্যান্ডল করতে না পারি কী হতে পারে, লেবাননের বৈরুতের অগ্নিকাণ্ড তার প্রমাণ।
নিয়ম অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ ধরনের বিপজ্জনক এবং হেজার্ড কার্গো আমদানির ক্ষেত্রে আগেই নৌবাহিনীর সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতি নিতে হয়। সে অনুযায়ী কর্গোগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে জাহাজ থেকে আনলোড করেই নিরাপদ দূরত্বে রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এ ধরনের অনুমতি ছাড়া বা মিথ্যা ঘোষণায় বিপজ্জনক কার্গো আনা হয়েছে কি না তার অনুসন্ধানে নেমেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় কেউ কোনো বিপজ্জনক পণ্য আনছে কিনা, সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। সেটি তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে। বিপজ্জনক এবং হেজার্ড কার্গো দ্রুত খালাস নিতে সম্প্রতি বন্দরের পক্ষ থেকে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।তারপরও আমদানিকারকরা গড়িমসি করায় ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম বন্দর। এ অবস্থায় বন্দরকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে বিপজ্জনক এবং হেজার্ড কার্গোগুলো বন্দরের পরিবর্তে শহরের বাইরে বিশেষায়িত অফডকে খালাসের পরামর্শ শিপিং এজেন্টদের।
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, বন্দরের বাইরে যদি যে কোনো একটা ডকে যদি এসব পণ্য খালাস ও শুল্ক বিষয় কাজ সম্পাদন করা হয়, তবে বন্দর ও শহরবাসী ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। আর বছরে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক আদায় হয় এসব আমদানি-রপ্তানি পণ্য থেকে।