ভোক্তাতন্ঠ ডেস্ক:
নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা মিয়ানমারের ওপর সমন্বিতভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে । বিরোধীদের ওপর সেনাবাহিনীর নৃশংস দমনপীড়নের জবাবে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্রাক্কালে দেশটির বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘বার্মার জনগণের প্রতি আমাদের দৃঢ় সমর্থন প্রদর্শন এবং জান্তা কর্তৃক সংঘটিত অভ্যুত্থান ও ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রতিক্রিয়া হিসাবে আমরা আজ এই পদক্ষেপগুলি নিয়েছি। আমরা সামরিক শাসন এবং যারা এটিকে সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রাখবো। সহিংসতার অবসান এবং বার্মাকে গণতন্ত্রের পথ ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত এটা চলবে।’
মিয়ানমারের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, নবনিযুক্ত বিমান বাহিনী প্রধান এবং অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
অভিযুক্ত তিন জন অস্ত্র ব্যবসায়ীর পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে অস্ত্রের ডিলার টে জাও-এর দুই প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে বার্মার সামরিক বাহিনী। ওয়াশিংটনের এমন ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় দেশটির কর্মকর্তাদের ওপর নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এলো।
মেজর জেনারেল জাই হেইন এবং তার ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সামরিক বাহিনীর এই ইউনিটের বিরুদ্ধে গত বছর বড়দিনের প্রাক্কালে দক্ষিণ-পূর্ব কায়াহ রাজ্যে তাদের গাড়িতে প্রায় ৩০ জন বেসামরিক মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বার্মিজ বিমান বাহিনীর সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত অস্ত্র বিক্রেতা ও সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ তালিকায় নবনিযুক্ত বিমান বাহিনী প্রধান জেনারেল হুতুন অং-এর নামও রয়েছে। তিনি সামরিক সংস্থা মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের একজন পরিচালক।
কানাডাও বিমান বাহিনী প্রধান হুতুন অংসহ চার জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া দুইটি কোম্পানিকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত ২১ মার্চ রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ওয়াশিংটনের হলোকস্ট জাদুঘরে এ ঘোষণা দেন। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধন’ অভিহিত করেছিল তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। যারা সবাই বর্মি সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, ‘২০১৬ এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে শক্ত প্রমাণ আছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষজ্ঞরা নির্যাতনের বিষয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন। সেখানে দেখা গেছে, মিয়ানমারের সেনারা খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং নিপীড়ন চালিয়েছে।’